কথিত জ্বীনের বাদশার সহযোগী পরিচয়দানকারী ৪ প্রতারক আটক

জ্বীনের মাধ্যমে রাতারাতি ধন-সম্পদের মালিক করে দেওয়ার কথা বলে দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে জ্বীনের বাদশার সহযোগী পরিচয়দানকারী দুই প্রতারকসহ ৪ জনকে আটক করেছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) রাতে ফতুল্লা মডেল থানার হরিহরপাড় এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারনা কাজে ব্যবহৃত লাল সালু কাপড় দ্বারা বাধানো হাতের লেখা একটি কবিরাজি খাতা (ভিতরে আরবিসহ বিভিন্ন লেখা আছে), একটি হাতের লেখা প্যাড (কবিরাজি ডায়রী) আরবিসহ বিভিন্ন লেখা আছে, একটি মাঝারি সাইজের আয়না, ২০টি মাদুলি (তাবিজের কভার), পুরাতন ছোট বড় ৪টি পিতলের কয়েন (তন্মেধ্যে ৩টি পিতলের একটাকার কয়েন, একটি রাণীর ছবি সম্বলিত বড় কয়েন) ৭টি ছোট বড় বিভিন্ন কোম্পানীর মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয় বলে জানায় ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ।

আটককৃতরা হলো, নীলফামারী সদর উপজেলার দোগাজির মৃত হোসেন আলীর ছেলে আমির হোসেন(৪০), মৃত একাব্বর আলীর ছেলে মো. দেলোয়ার হোসেন(৪৮), ফতুল্লা ধর্মগঞ্জের সুজনের বাড়ীর ভাড়াটিয়া মো. মহারাজ ওরফে মিরাজ (৫৫) ও কাশিপুর ভুঁইয়াপাড়া এলাকার মৃত বারেক মিয়ার ছেলে আ. কাদের কিবরিয়া(৪৮)।

এ ঘটনায় প্রতারনার শিকার ফতুল্লা মডেল থানার হরিহর পাড়ার বাবুল হোসেনের ছেলে মো. জুয়েল(২৭) বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বাদীর বাবা বাবুল হোসেন অভিযুক্ত আসামী মহারাজ ওরফে মিরাজ পূর্ব পরিচিত। তার মাধ্যমে বাদীর বাবার সাথে পরিচয় হয় অভিযুক্ত আমির হোসেন ও দেলোয়ার হোসেনের সাথে। পরিচয়কালীন সময়ে আমির হোসেন ও দেলোয়ার হোসেন নিজেদেরকে জ্বীনের বাদশা’র সহযোগী বলে পরিচয় দেয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে অভিযুক্তরা বলে জ্বীনের মাধ্যমে রাতারাতি তাকে ধন-সম্পদের মালিক বানিয়ে দিবে। এক্ষেত্রে জ্বীনদের আপ্যায়ন করা বাবদ অর্থ দিতে হবে। পরবর্তীতে ৫-১০ হাজার টাকা করে পর্যায়ক্রমে অভিযুক্তরা জ্বীনদের আপ্যায়ন বাবদ দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।

সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) বেলা ১২ টার দিকে অভিযুক্তরা বাদীর বাসায় গিয়ে জানায় যে তাদের কে ধন-সম্পদের মালিক করে দিবে। বহু টাকা মূল্যমানের রড এবং সিমেন্ট জ্বীনের মাধ্যমে তাদের বাসায় নিয়ে আসা হচ্ছে। তাছাড়া বাদীর বাবাকে ধণী লোক করে দিবে বলে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে এলাকার বিভিন্ন বিল্ডিং দেখিয়ে বলে বিল্ডিং কিনে দিবে। এক্ষেত্রে জ্বীনদের জন্য আরও কিছু টাকা দাবী করে। এতে করে সন্দেহ দেখা দিলে তারা জরুরী সেবা -৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশকে অবগত করে।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম জানায়, গ্রেপ্তারকৃত প্রতারক চক্রের সদস্যরা নিজদেরকে জ্বীনের বাদশার লোক পরিচয় বহন করে রাতারাতি ধন-সম্পদের মালিক করে দেওয়ার কথা বলে বাদী ও তার বাবার নিকট থেকে দেড়লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। জরুরী সেবা-৯৯৯ এ ফোন পেয়ে মঙ্গলবার রাত ৭টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে জ্বীনের বাদশার লোক পরিচয়দানকারী আমির হোসেন, দেলোয়ার হোসেন ও তাদের দুই সহযোগী কাদের এবং মিরাজকে আটক করা হয়। এসময় প্রতারনার কাজে ব্যবহৃত কবিরাজি সরাঞ্জম উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের পাচঁ দিনের রিমান্ড চেয়ে বুধবার দুপুরে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button