বিশ্ব মানবাধিকার দিবস ও আমাদের পরিবেশ

কাল ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। ১৯৫০ সাল থেকে প্রতিবছর এই দিনে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালন করা হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৮ সালের এই দিনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। ১৯৫০ সাল থেকে জাতিসংঘ এই দিনটিকে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়। সেই থেকে জাতিসংঘ ভুক্ত দেশসম‚হে এই দিনটি বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় জাতীয়ভাবে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে পালিত হয়ে আসছে।

জাতিসংঘ প্রতি বছরই দিবসটি উপলক্ষে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য “সবার জন্য স্বাধীনতা, সম অধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা”।

মানবাধিকার দিবসের তাৎপর্য বলে শেষ করা যাবে না। তবে মৌলিক অধিকার সম‚হ বাস্তবায়ন করা মানবাধিকারের প্রধান লক্ষ্য। মৌলিক অধিকার সম‚হ যেমন খাদ্য বস্র বাসস্থান চিকিৎসা ছাড়াও বহুবিধ অধিকার রয়েছে। যেমন: রাজনৈতিক অধিকার সামাজিক অধিকার মত প্রকাশের স্বাধীনতা অধিকার ভোটাধিকার ইত্যাদি। পৃথিবীর বয়স যত বাড়ছে সারা বিশ্বে মানবাধিকার ততটা ভ‚লন্তিত হচ্ছে। মানুষের অধিকার পরিবার সমাজ এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।. একজন মানুষ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তার নাগরিক অধিকার পাওয়ার কথা থাকলেও সে সেই অধিকার থেকে বি ত সারা বিশ্বে। যুদ্ধ বিগ্রহ লেগেই আছে। মানবাধিকার ভ‚লুণ্ঠিত হওয়ার সাথে সাথে দেশের নাগরিকের শান্তি উবে গেছে। মানুষ যেন হিংস্র থেকে হিংস্রতর হয়ে যাচ্ছে। স্বার্থের লোভে অর্থের লোভে একজন মানুষ যা করছে তাতে অন্য মানুষের সুখ শান্তি জীবনধারা বিঘনিত হচ্ছে।
অর্থের লোভে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন নগরায়ন বাজার প্রভৃতি ক্ষেত্রে মানুষের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে আজ বিশ্ব জলবায়ু হুমকির সম্মুখীন। বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড আরগান হিলিয়াম ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম ক্যাডমিয়াম সিসা লৌহ কণিকা প্রভৃতি বিষাক্ত ধাতু মিশে বায়ুকে ভারী করে তুলছে। ফলে বিশুদ্ধ বায়ু থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করার যে মানুষের অধিকার তা বিঘনিত হচ্ছে। গত পঞ্চাশ বছরে বায়ুর তাপমাত্রা স্থান ভেবে ১ থেকে ২ ডিগ্রী বেড়ে গেছে। ২১০০ সালের মধ্যে যদি জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে এই তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রী পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা অভিমত প্রকাশ করেছেন। তাপমাত্রা বেড়ে গেলে মেরু অ লের বরফ গলে সাগরের উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। ফলে নিন্মাঞ্চলের দেশসমূহ সমুদ্রগর্ভে তলিয়ে যেতে পারে। এর ফলে বহু লোক বাস্তহারা হবে। সুতরাং প্রকৃতিকে দ‚ষিত করায় অনিয়ন্ত্রিত জলবায়ুর প্রভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে। এর জন্য দায়ী অপরিকল্পিত নগরায়ন শিল্পায়ন বাজার ও মানুষের অসচেতনতা।

মানুষের মানবতাকে জাগ্রত করতে হবে মানবাধিকার বাস্তবায়নের জন্য সংগ্রাম লড়াই করতে হবে। আজকের এই দিনে বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে এই হোক আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার।

মোহাম্মদ হোসাইন
চেয়ারম্যান,
পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button