লস এ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ডে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য অধিক বরাদ্দের দাবি

আসাদুজ্জামান সম্রাট ((এক্সপো সিটি), দুবাই: কোন প্রকার দুষণ না করেও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মালদ্বীপসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো। এবারের সম্মেলনে শুরু হওয়া লস এ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড থেকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন মালদ্বীপের জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ ও জ্বালানি মন্ত্রী তরিক ইব্রাহিম।

দুবাইয়ে এক্সপো সিটিতে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনের সপ্তম দিনে একটি সাইড লাইন ইভেন্টে তিনি এ দাবি জানান। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো তিনিও জলবায়ু সম্মেলনের স্বোচ্ছার ভুমিকা পালন করছেন। এর আগে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ সমুদ্রের নীচে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক করে সারা বিশ্বে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন।

সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেইঞ্জ জার্নালিস্ট’স ফোরামের সঙ্গে সম্মেলনে ব্লুজোনের ৩৩ নম্বর কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সচে’ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ মালদ্বীপের এই মন্ত্রী দক্ষিণ এশিয়ার জলবায়ু ন্যায্যতা আদায়ে আঞ্চলিক সহযোগিতার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

সংগঠনের সভাপতি আশিস গুপ্তার সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব আসাদুজ্জামান সম্রাটের সঞ্চালনায় এই মত বিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি কেরামত উল্লাহ বিপ্লব, সহ সভাপতি রাবনেওয়াজ চৌধুরী ও শ্রীরাম সুবেদী।

মালদ্বীপের মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক দ্বীপ বসবাসের উপযোগিতা হারিয়েছে। স্যানিটেশনসহ নানা সমস্যার কারনে স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু দ্বীপগুলো আলাদা আলাদা হওয়ায় এই সমস্যাগুলো আমরা সমাধান করতে পারছি না।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সামুদ্রিক কোরাল যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ঠিক তেমনি সামুদ্রিক মৎস আহরণও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পর্যটন শিল্প থেকে আমাদের ৩০% জিডিপ আসলেও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেইঞ্জ জার্নালিস্ট’স ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও মহাসচিব আসাদুজ্জামান সম্রাট বলেন, হিমালয়ের বরফ গলে যেভাবে গলে যাচ্ছে তেমনি সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারনে অকাল বন্যা যেভাাবে দেখা দিচ্ছে তেমনি প্রতি বছর শুরু বাংলাদেশেই ২ লক্ষ মানুষ জলবায়ু উদ্বাস্তুতে পরিনত হয়েছে। ফলে নগরাঞ্চলে দরিদ্র মানুষের চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, ধনীদেশগুলো নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও গ্রীন ক্লাইমেট ফান্ড ও প্রথমবারের মতো লস এ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ডে যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা অপ্রতুল।

নির্বাহী সভাপতি কেরামত উল্লাহ বিপ্লব দক্ষিণ এশিয়ার জলবায়ু ন্যায্যতা আদায়ে আলাদাভাবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে নিয়ে একটি জলবায়ু সম্মেলনের আয়োজনের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

সহ-সভাপতি রাবনেওয়াজ চৌধুরী বলেন, পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসে যে ক্ষতি হয়েছে তার জন্য জলবায়ু পরিবর্তন দায়ী।

এ সময়ে সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ মাছুম বিল্লাহ, নির্বাহী সদস্য প্রগতি ধাকাল এবং মালদ্বীপের জলবায়ু পরিবর্তন পরিবেশ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতমাহ উসরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে বিকেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button