ঐতিহাসিক জয়ে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ
রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টে জয়ের একটা ভিত ম্যাচের চতুর্থ দিনেই তৈরি করে রেখেছিল বাংলাদেশ। তবু জয় আসবে কিনা এমন অনিশ্চয়তায় সবার আগে উঠছিল বৈরি আবহাওয়ার প্রসঙ্গ। আজ বৃষ্টি, এমনকি বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভবনাও ছিল রাওয়ালপিন্ডিতে। তবে বৃষ্টির সম্ভবনা সত্যি হয়নি। এদিকে, বাংলাদেশও টেস্টের শেষ দিনে খেলেছে ক্যালকুলেটিভ ক্রিকেট। দুই মিলিয়ে পাকিস্তানের মাটিতে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ।
প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। রাওয়ালপিন্ডিতেই দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১০ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। আজ দ্বিতীয় ম্যাচে ৬ উইকেটে জিতেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
এই সিরিজের আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে কোনো জয়ই ছিল না বাংলাদেশের। সেই ক্ষরা কাটিয়ে সিরিজ জয়ের গৌরবই অর্জন করল লাল-সবুজের দল। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের এটা তৃতীয় টেস্ট সিরিজ জয়ের সাফল্য। এর আগে ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে বোর্ডের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ার কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বেশ কয়েকজন নিয়মিত ক্রিকেটার সেই সিরিজটা খেলেননি। এরপর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। সে হিসেবে বিদেশে শক্তি ও মর্যাদার বিচারে এই জয়টাকেই সবার উপরে রাখতে হবে।
রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম ইনিংসে ২৭৪ রান তুলেছিল পাকিস্তান। পরে বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসের শুরুতে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারালেও লিটন দাস ও মেহেদি হাসান মিরাজের বীরত্বগাথা এক জুটির কল্যাণে ২৬২ রান তোলে। এরপর দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশের পেস আক্রমণ। ১৭২ রাানে পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশি পেসাররা। যাতে জয়ের জন্য টার্গেট দাঁড়ায় ১৮৫ রান। কাল শেষ বিকেলে দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন তরুণ জাকির। আজ অভিজ্ঞ নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসানরা বাংলাদেশকে ঐতিহাসিক জয় এনে দিলেন।
গতকাল দুর্দান্ত ব্যাটিং করা জাকির হাসান আজ খুব বেশিদূর এগুতে পারেনি। ব্যক্তিগত ৪০ রানের মাথায় মির হাজমার দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন। তিনে নেমে আজ দারুণ ব্যাটিং করছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথমে সাদমান ইসলামের সঙ্গে পরে মুমিনুল হকের সঙ্গে কার্যকারী দুটি জুটি গড়েছেন শান্ত। তবে তিনজনই আউট হয়েছেন একই আফসোস নিয়ে! সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি!
সাদমান ৫১ বলে ২৪ রান করে ফিরেছেন খুররাম শেহজাদের বলে। ৮২ বলে ৩৭ রান করা নাজমুল হোসেন শান্ত ফিরেছেন সালমান আগার বলে। মুমিনুল হকের আউটটা লেগেছে দৃষ্টিকটু। আবরার আহমেদকে উঁচিতে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন মুমিনুল। ফিরেছেন ৭১ বলে ৩৪ রান করে। এরপর দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম আর বিছিন্ন হননি। ম্যাচ জিতিয়ে তবেই মাঠ ছেড়েছেন।
পুরো সিরিজে রান না পাওয়া সাকিবের শটেই বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হয়েছে! শেষ পর্যন্ত ৪৩ বলে ২১ রানে অপরাজিত ছিলেন সাকিব। আর মুশফিকুর রহিম ৫১ বলে ২২ রানে অপরাজিত ছিলেন।