Trending

গোয়েন্দা ইতিহাসের অদেখা অধ্যায়: সিআইএ-র চমকপ্রদ অপারেশনগুলো

মুমতাহিনা চৌধুরী করেসপনডেন্ট, চট্টগ্রাম।

৯ডিসেম্বর ২০২৪, ২২: ০৮

“সিআইএ” নামটি বিশ্বের প্রায় সব মানুষের কাছে পরিচিত। এই সংস্থাটির বিভিন্ন অপারেশন সিনেমার গল্প কে ও হার মানাবে। চলুন আজ জেনে আসি এই সংস্থাটির কয়েকটি অপারেশন সম্পর্কে,

অপারেশন মারলিন

নব্বইয়ের দশকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিশালী রাষ্ট্র ইরান। এটি অবশ্যই আমেরিকার জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, কারণ কোনো পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র চাইবে না যে আরেকটি দেশ তাদের শক্তির সমান শক্তি অর্জন করুক। এই অবস্থায় সিআইএ ইরানের এই কর্মসূচি বন্ধ করতে এগিয়ে আসে।

সিআইএ আমেরিকায় বসবাসরত এক রাশিয়ান নিউক্লিয়ার বিজ্ঞানীকে মাসিক ৫ হাজার ডলার দিয়ে নিয়োগ দেয়। তার কাজ ছিল, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্লুপ্রিন্ট সরবরাহ করা। ইরানকে বিশ্বাস করানো হয়েছিল যে এই ব্লুপ্রিন্টগুলো অন্তত ২০ বছর এগিয়ে থাকা প্রযুক্তি।

তবে, প্রকৃতপক্ষে এগুলো ছিল ভুলে ভরা। ২০০০ সালের ৩ মার্চ সিআইএ “টিবিএ-৪৮০ ফায়ার সেট” মডেলের পারমাণবিক অস্ত্রের ব্লুপ্রিন্ট ইরানকে সরবরাহ করে। কিন্তু সেই রাশিয়ান বিজ্ঞানী ভুলগুলো শনাক্ত করে ইরানকে সতর্ক করেন। ফলে, এই অপারেশনটি সিআইএ এবং পেন্টাগনের জন্য একটি বিপদে পরিণত হয়।


পাকিস্তানে জাল টিকা প্রদান

ওসামা বিন লাদেন ছিল আমেরিকার জন্য এক বড় মাথাব্যথার কারণ। তাই তাকে ধরার জন্য সিআইএ বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনার একটি ঘটে পাকিস্তানে।

সেখানে শাকিল আফ্রিদি নামে এক ডাক্তারকে নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি অ্যাবোটাবাদ এলাকায় টিকাদানের নামে হাজার হাজার শিশুর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন। উদ্দেশ্য ছিল, লাদেনের অবস্থান নিশ্চিত করা। রক্তের নমুনার মাধ্যমে যদি কোনোভাবে লাদেনের সাথে সম্পর্ক পাওয়া যায়!

কিন্তু, দুইদিন পরেই লাদেন ধরা পড়েন এবং সেই সাথে ডক্টর শাকিল আফ্রিদিও গ্রেফতার হন। পাকিস্তানের আদালত তাকে ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়। তবে, এই ঘটনা পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে এবং সেখানে টিকাদান কর্মসূচি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

অপারেশন অ্যাক্যুস্টিক কিটি

সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে আমেরিকা কোনো তথ্য সংগ্রহের সুযোগ হাতছাড়া করেনি। সিআইএ নতুন একটি পরিকল্পনা নেয়, যার নাম ছিল “অপারেশন অ্যাক্যুস্টিক কিটি”, যেখানে বিড়ালকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

বিড়ালের কানে মাইক্রোফোন এবং মাথায় ট্রান্সমিটার স্থাপন করা হয়। এর মাধ্যমে সোভিয়েত দূতাবাসে গোপনে কথোপকথন রেকর্ড করার উদ্দেশ্য ছিল। ১৯৬৭ সালে পরীক্ষামূলকভাবে এই বিড়ালকে আমেরিকায় সোভিয়েত দূতাবাসে পাঠানো হয়।

কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, বিড়ালটি একটি গাড়ির নিচে চাপা পড়ে মারা যায়। এর পর সিআইএ এই অপারেশনটি বাস্তবসম্মত না হওয়ায় বন্ধ করে দেয়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button