গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব দেখা যায় অন্তর্বর্তী সরকারে। এরপর ২৮ ফেব্রুয়ারি নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণা করা হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে আহ্বায়ক করে। তবে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি ঘোষণার আগেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া একটি পক্ষ ওই দলে না থাকার ঘোষণা দিয়েছিল।তাদের মধ্যে অন্যতম জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ।তিনি রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফরম গঠনের উদ্যোগের ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী এপ্রিল মাসে নতুন এই প্ল্যাটফরম আসছে বলে জানিয়েছেন।
আজ রবিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক পোস্টে এই প্ল্যাটফরমের বিষয়ে ঘোষণা দেন আলী আহসান জুনায়েদ। তিনি ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’ শক্তির এই প্ল্যাটফরমের প্রধান উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।ফেসবুক পোস্টে জুনায়েদ বলেন, ‘৩৬ শে জুলাই গণভবনের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন যুগের সূচনা হলেও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া বহু মানুষের কাছে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। পিলখানা, শাপলা ও জুলাই গণহত্যার মতো ভয়াবহ অপরাধের বিচার, ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ, দুর্নীতিমুক্ত সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামো নির্মাণ, ধর্মবিদ্বেষ ও ইসলামোফোবিয়ামুক্ত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ গঠন, ফ্যাসিবাদী কাঠামোর সম্পূর্ণ বিলোপ এবং আধিপত্যবাদের বিপক্ষে কার্যকর অবস্থান—এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আজ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে গৌণ হয়ে পড়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের স্বীকৃতি ও সম্মান দেওয়ার কাজ এখনো অসম্পূর্ণ রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে আমরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের সব রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফরম গঠনের উদ্যোগ নিয়েছি।এর মাধ্যমে আমরা গণ-অভ্যুত্থানের দাবিগুলো প্রকৃতই বাস্তবায়ন করতে চাই।’
৩৬ শে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশে যে বিপ্লবের সূচনা হয়েছে, তা পূর্ণতা দেওয়া এই প্ল্যাটফরমের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন আলী আহসনান। তিনি বলেন, ‘সমাজের সর্বস্তরে যোগ্য ও নৈতিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, সামাজিক সুবিচার ও মানবিক মর্যাদা নিশ্চিতকরণ, সামাজিক নিরাপত্তা বিধান, বিদ্যমান ফ্যাসিবাদীব্যবস্থার মূলোৎপাটন এবং আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারলে এই বিপ্লব পরিপূর্ণতা পাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’জাতীয় নাগরিক কমিটির এই নেতা আরো বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সামাজিক চুক্তির ভিত্তিতে বাংলাদেশ পুনর্গঠন সম্ভব।’সবাইকে এই প্ল্যাটফরমে আহ্বান জানিয়ে জুনায়েদ বলেন, ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠনের এই উদ্যোগে আপনাদের সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানাই।
আসুন, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ গঠনের এই সংগ্রামে শামিল হই।’
এই প্ল্যাটফরম থেকে পরবর্তীতে নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।