প্যারিস চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে বিশৃঙ্খলার জন্য উয়েফা দায়ী
প্যারিসে লিভারপুল বনাম রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যকার ২০২২ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের আগে বিশৃঙ্খলার জন্য প্রাথমিক ভাবে উয়েফা দায়ী – ইউরোপীয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা কর্তৃক গঠিত স্বাধীন কমিনশনের পক্ষ থেকে এমন দাবী করা হয়েছে।
উয়েফা গঠিত একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন ফাইনালের ঘটনার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ন্যক্কারজনক এই ঘটনার কারনে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল ‘প্রায় বিপর্যয়ের দিকে চলে যাচ্ছিল’।
ফাইনাল ম্যাচটি নির্ধারিত সময়ের ৩৭ মিনিট দেরিতে শুরু হয়। উয়েফা ও ফরাসি কর্তৃপক্ষ সেই দাঙ্গার জন্য প্রাথমিকভাবে টিকিটবিহীন সমর্থকদের দায়ী করেছিল। প্রতিবেদনে এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ফাইনালের আগে প্যারিসের পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছিলেন রিয়াল ও লিভারপুলের সমর্থকেরা। নির্ধারিত সময়ে খেলার শুরু না হবার কারন হিসেবে প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছিল সমর্থকদের ঢুকতে দেরি হচ্ছে বলে খেলা পেছানো হয়েছে।
ফরাসি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছিল টিকিটবিহীন লিভারপুলের কিছু সমর্থক মাঠে ঢোকাতেই এ সমস্যার উৎপত্তি। সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, কর্তৃপক্ষের গাফিলতি সমর্থকদের ভোগার কারণ। টিকিট থাকা সত্ত্বেও লিভারপুলের ২ হাজার ৭০০ সমর্থক সেদিন মাঠে ঢুকতে পারেননি। প্যারিসের স্থানীয় অনেক মানুষ অনেক সমর্থকের টিকিট ছিনতাই করেছেন। ঝামেলার একপর্যায়ে নিরীহ সমর্থকদের ওপর পেপার স্প্রে নিক্ষেপ করেছিল প্যারিসের পুলিশ।
২৮ মে’র ফাইনালে স্তাদে ডি ফ্রান্সের মাঠে রিয়াল মাদ্রিদ ১-০ গোলে জয়ী হয়ছিল। উয়েফা ও ফরাসি কর্তৃপক্ষ বিভিন্নভাবে ম্যাচটি দেরী হবার পিছনে সমর্থকদেরই দায়ী করেছেন। টিকিট কালোবাজারী, টিকিট থাকা সত্বেও মাঠে প্রবেশ করতে না পারা এসব ঘটনা তখন আলোচনায় উঠে আসে। জুলাইয়ে ফেঞ্চ সিনেট তদন্তে উঠে আসে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবেই এই ধরনের বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল। এই ঘটনায় ফ্রান্সে বড় কোন ইভেন্ট আয়োজন নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। বিশেষ করে এ বছর রাগবি বিশ্বকাপ ও ২০২৪ সালের প্যারিস অলিম্পিক গেমস সুষ্ঠভাবে আয়োজন নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছে।
তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন উয়েফার জেনারেল সেক্রেটারি থিওডোর থিওডোরিদিস। তিনি বলেছেন, ‘উয়েফার পক্ষ থেকে আমি ক্ষমা চাচ্ছি। যেটি ক্লাব মৌসুম উদযাপনের সেরা সময় হওয়ার কথা, সেটি না হয়ে সেদিন যারা ভুগেছেন, তাদের কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি। বিশেষ করে লিভারপুলের সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চাই।’
গত বছর ৩০ মে এই স্বাধীন কমিশন গঠন করা হয়। সোমবার এই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
লিভারপুলের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘স্বাধীন কমিশন গঠন করার পর আট মাস পেরিয়ে গেছে। আমাদের সমর্থকদের কাছে একটি সঠিক পন্থায় কমিশন রিপোর্ট পেশ করেছে।’