তুরস্কে ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার কাজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মানবিক দৃষ্টান্ত
তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার কাজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিশেষ উদ্ধারকারী দল অনন্য মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় তুরস্কের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা গাজীন্তেপ প্রদেশে উদ্ধারকাজ ও চিকিৎসা সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ৪৬ সদস্যের একটি বিশেষ উদ্ধারকারী দল গত ৮ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে গেছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি স¥ারণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্প তুরস্কের পূর্বাচলে গাজীন্তেপ প্রদেশে আঘাত হানে। আকস্মিক এ ভূমিকম্পে ব্যাপক প্রাণহানি, স্থাপনা ধ্বংস এবং সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে নাগরিক সুবিধাসমূহ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকাজে সহায়তার জন্য তুরস্ক সরকারের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এই সেনাবাহিনীর বিশেষ দল সেখানে পাঠানো হয়।
উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে সেখানে তীব্র শীতের মাঝে বৈরী পরিস্থিতিতেও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে । বাংলাদেশের উদ্ধারকারী দল তুরস্কের আদিয়ামান শহরে ভূমিকম্পে ভেঙ্গে পড়া ভবনের ভেতর থেকে ১ জনকে জীবিত এবং ১৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। এছাড়াও ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত ৬টি ভবনের ধ্বংসস্তুপ অপসারণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে ১২০ কার্টুন খাবার এবং ৭২টি তাবু বিতরণ করে।
ভূমিকম্প দুর্গত স্থানীয় লোকজনের মাঝে চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেডিকেল টিমটি দু’টি ভাগে বিভক্ত হয়ে একটি স্থায়ী মেডিকেল সেন্টার এবং উদ্ধার অভিযান স্থানে ফার্স্ট এইড টিম হিসেবে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে। স্থায়ী মেডিকেল সেন্টারটি মূলত ভূমিকম্পের ফলে আঘাতপ্রাপ্ত ও মানসিক ট্রমায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকে। মেডিকেল টিমটি এ পর্যন্ত ১০৪ জনকে চিকিৎসা সেবা প্রদান ও তাদের মাঝে ৩২ কার্টুন ঔষধ বিতরণ করে।
উদ্ধারকারীরা প্রাণের সন্ধানে এখনও কঠোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। পাশাপাশি আটকে পড়াদের উদ্ধার করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, সেটি হোক জীবিত অথবা মৃত। বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ স্থানীয় জনগণের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।