আড়াইহাজারে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিয়েও শেষ পর্যন্ত বাঁচতে পারলো না মোসলেম

শেষ পর্যন্ত মারাই গেলেন মোসেলম মিয়া। যদিও প্রতিপক্ষের হামলার আশংকা করে আড়াইহাজার থানায় তার স্ত্রী লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ সেই অভিযোগ আমলে নেয়নি। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মোসলেম মিয়া। তার মৃত্যুর জন্য পুলিশকেই দায়ি করেছেন নিহতের স্ত্রী সাহেরা খাতুন।

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের সালমদী নয়াপাড়া গ্রামে ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে গোটা এলাকা রণক্ষেত্র পরিণত হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। পরে রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোসলেম মিয়া মারা যান। এই ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

নিহতের স্ত্রী সাহেরা খাতুন বলেন, গত ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে আমরা থানায় ঘুরেছি একটি লিখিত অভিযোগ নিয়ে। পরে সেটি থানায় দিয়েছি। কিন্তু থানায় অভিযোগ দেয়ার পরও কেউ আমাদের এখানে আসেনি। যদি পুলিশ আসতো এটার একটা সমাধান হতো। আমি সেই অভিযোগের কাগজ এখনো হাতে নিয়ে ঘুরছি। আমি ও আমার মেয়ে ঘটনার সময় বার বার ফোন দিয়েছি পুলিশকে। কেউ আসেনি। যদি পুলিশ আসতো আজ আমার স্বামী মারা যেতোনা আমার সন্তানরা মৃত্যুর পথে থাকতোনা। এসব বলেই বা আর কি হবে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাহমুদপুর ইউনিয়নের শালমদী নয়াপাড়া এলাকায় বাতেন ও তার চাচাত ভাই মোসলেম  গ্রুপের মধ্যে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে প্রথমে তর্ক বিতর্ক এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে নারীসহ কমপক্ষে ১৫ আহত হয়। আহতরা হলেন- মোসলেম,  বাতেন, রেজাউল, গিয়াসউদ্দিন, রমজান, আউয়াল, মোস্তফা, ফারুক, সোহরাব, রানী বেগম, জুলহাস। এদের মধ্যে চিকিতসাধিন অবস্থায় মারা যান মোসলেম।

থানার একাধিক সুত্র জানায়, গত ২১ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি জানিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ থানায় দিয়েছেন মোসলেম। তার অভিযোগটি গ্রহণ করে সেটি  উপ পরিদর্শক এস আই ইমরানের কাছে তদন্তের জন্য ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দেয়া হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে পরবর্তীতে আর নেয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ। এর মধ্যেই শুক্রবার সংঘর্ষের ঘটনায় মৃত্যু হয় মোসলেমের।

২১ ফ্রেবুয়ারীর অভিযোগে মোসলেম জানিয়েছিলেন, প্রতিপক্ষ খারাপ প্রকৃতির লোক।  আমাকে আক্রমন করতে পারে। আমাকে মেরে ফেলতে পারে। অবশেষে সত্যিই তিনি মারা গেলেন।

আড়াইহাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইমরান জানান, অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমার কাছে কোন অভিযোগ দেয়নি।

আহত রেজাউল জানান, শালমদী চকের মধ্যে একটি ফসলী জমির ১২ শতাংশ জমি পৈত্রিক ওয়ারিশ সুত্রে তারা রেকর্ডে মালিক হয়েছেন। উক্ত জমি বাতেন গং জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন। শুক্রবার জমিতে চারা রোপন করে বাড়ি ফেরার পথে বাতেনের লোকজন আমাদের উপর হামলা করেছে। হামলায় মোসলেম মারা যায়। আহত হয়েছে আরো  অনেকে। 

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক হাওলাদার বলেন, হত্যা মামলার বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ২১ তারিখে কোন অভিযোগ দিয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button