নারায়ণগঞ্জ শহরে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের প্রতিবাদী মানববন্ধন ও মিছিল

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও সাংবাদিক শামসুজ্জামানের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং শামসুজ্জামানের  নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে নারায়ণগঞ্জ শহরে  প্রতিবাদী মানববন্ধন ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে রবিবার (২ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে প্রতিবাদী মানববন্ধন ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জ জেলা সংসদের সহ-সভাপতি ইসরাত জাহান নুহার সভাপতিত্বে এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রাতুলের সঞ্চালনায় প্রতিবাদী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ছাত্রনেতা মুন্নি সরদার, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন শহর সংসদের সভাপতি ইফাত ইমতিয়াজ অয়ন্ত, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জেলা সংসদের স্কুল বিষয়ক সম্পাদক আবির হোসেন প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশ জুড়ে সাংবাদিক, লেখক, কার্টুনিস্ট, মানবধিকার কর্মীসহ জনগনের কন্ঠ রোধ করতে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে গ্রেফতার, হয়রানি, ভীতি প্রদর্শন করেই যাচ্ছে। ২০১৮ সালের ১ম অক্টোবর সরকার তার শাসন ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রনয়ণ করেন। এই আইন প্রণয়ন হওয়ার পর থেকে দুই হাজারের অধিক মামলা হয়েছে।

যার অধিকাংশই হয়েছে সাংবাদিক, লেখক, রাজনৈতিক কর্মীদের নামে। গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশিত এক দিনমজুরের মন্তব্য “ পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কি করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। 

আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো”Ñ নিয়ে প্রতিবেদন করার হয়। প্রথম আলোর সাংবাদিক সামস এই প্রতিবেদন করায় তাকে গভীর রাতে বিনা ওয়ারেন্টে সাভারের নিজ বাসা থেকে সিআইডি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যায় এবং তার ৩৫ ঘন্টা পরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।

যুবলীগ কর্মী দিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়। পরে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধেও মামলা দেয়া হয়।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, খাবারের স্বাধীনতা কোন দিনমজুরের একার কথা না, এটা সারাদেশের মানুষের কথা। মানুষের এই দুরাবস্থার কথা বলাই এখন কাল হয়ে গেছে। 

গণমাধ্যম কর্মীসহ সকল মানুষের প্রতিবাদের ভাষা সরকার রুদ্ধ করে দিতে চায়। ২০২০ সালে লেখক মুশতাককে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করে, কারাগারে হত্যা করা হয়, কার্টুনিস্ট কিশোরকে এই আইনে গ্রেফতার করে নির্যাতন করা হয়।

নেতৃবৃন্দ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ৫২ তম বছর পার হচ্ছে কিন্তু মানুষ তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বর্তমান সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দ্বারা জনগণের সাংবিধানিক অধিকার বাক স্বাধীনতাকে চূড়ান্তভাবে হরণ করছে।

সরকার সামান্য সমালোচনাকেও সহ্য করছে না। এই সরকার জনবিচ্ছিন্ন সরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ দ্বারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।

নেতৃবৃন্দ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা ও প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান এবং সাংবাদিক শামসুজ্জামান সামসের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা ও সাংবাদিক সামসকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার জোড় দাবি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *