ঈদকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে সক্রিয় মৌসুমি অপরাধী চক্র
ঈদকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে সক্রিয় হয়েছে উঠেছে মৌসুমি অপরাধী চক্র। ঈদ এগিয়ে আসার ফলে বেড়েছে মানুষের অবাধ চলাফেরা। মার্কেটগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। আর এ সুযোগেই তৎপরতা শুরু করেছে ছিনতাই, অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির সদস্যরা। ইতিমধ্যে নগরীতে বিক্ষিপ্ত বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটছে।
তবে পুলিশ বলছে, ‘এসব অপরাধ দমনে সাদা পোশাকে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।’ যদিও এর কোন সুফল এখনো পায়নি নগরবাসী। হরহামেশাই এসব ঘটনার খবর মিলছে।
সুত্র মতে, নারায়ণগঞ্জ নগরীকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি ছিনতাইকারী চক্র। যাদের বেশির ভাগই ভাসমান। সারাদিন চাষাঢ়া, বঙ্গবন্ধু সড়কসহ আশেপাশের স্থানে এদের চলাচল বেশি। এসব চক্রে শুধু ছেলে নয় বরং রয়েছে নারী সদস্যও। চক্রের সদস্যরা একে অপরের যোগসাজসে প্রথমে ভিকটিম টার্গেট করে, পরে সুযোগ বুঝে ছিনিয়ে নেয় টাকা, মোবাইলসহ মুল্যবান জিনিসপত্র। অনেক সময় ছিনতাইকারীদের দক্ষতা এত বেশি, যে ভিকটিম বুঝতেও পারে না কখন কোথায় তার মুলবান জিনিস লাপাত্তা হয়েছে।
রোজার শুরুতেই নগরীর ২নং গেট এলাকায় ঘটে যায় এমনই একটি ঘটনা। মুন্সিগঞ্জ যাওয়ার পথে এক কিশোরী ছিনতাইকারীর কবলে পরেন এক নারী। তবে, সৌভাগ্যবসত জনগনের হাতে ধরা পরে যায় ওই কিশোরী ছিনতাইকারী। তার নাম আয়েশা বলে জানায় সে। এমনকি তার সাথে এ কাজে আরও বেশ কয়েকজন আছে বলে পুলিশ ও গণমাধ্যম কর্মীদের জানায় কিশোরী। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
এরকম নানান ঘটনাই প্রতিনিয়ত ঘটছে শহরে। তবে, বেশির ভাগ খবর পৌছাতে পারে না পুলিশ অব্দি। পুলিশি ঝামেলা এড়াতে মারধর করেই ছেড়ে দেয়া হয় ছিনতাইকারীদের।
তবে, এমনটি না করে পুলিশের সহায়তা করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, ‘পুলিশি ঝামেলা এড়াতে মারধর করে ছেড়ে দেয়া ঠিক নয়। পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হলে ওদের নিয়ন্ত্রন করতে পুলিশের পক্ষে সহজ হবে। নগরবাসীকে বলবো, আপনারা এসব ঘটনা পুলিশকে জানান। প্রয়োজনে পুলিশ বাদী হয় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে।’
এদিকে, চুরি-ছিনতাই এর ঘটনায় উদগ্রীব প্রকাশ করেছে নগরীর মার্কেটের দোকান মালিক ও ক্রেতারা। নগরীর সমবায় মার্কেটের নিচ তলায় অবস্থিত শাড়ীর দোকান মালিক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘ঈদকে কেন্দ্র করে ছিনতাইকারী বেড়েছে। ভদ্র-বেশে থাকে বলে তাদের চেনাও মুশকিল। এসকল বিষয়ে পুলিশের ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
কথা হয় মার্ক টাওয়ারের আসা ক্রেতা আল আমিনের সাথে। তিনি বলেন, ‘পরিবার নিয়ে ঈদের মার্কেট করতে এসেছি, সাথে ছোট বাচ্চাও আছে। ঈদের কেনাকাটা করতে আসলে ছিনতাইকারীর একটি ভয় থাকেই। মুল্যবান জিনিসপত্র গুলো একটু খেয়ালে রাখতে হয়। কষ্টের টাকায় ঈদের পোষাক কিনতে এসে যদি এরকম কিছু হয় তাহলে কি আর, ঈদের আনন্দ থাকে।’
অভিযোগ রয়েছে ফুটপাতের ব্যবসায়দেরও। তারা বলেন, ‘আমরা ফুটে দোকানদারি করি। আমাদের কাছ থেকে কিছু কিনতে গিয়ে যদি কারো কিছু হারায়, তখন আমাদেরও কষ্ট লাগে। আমরা চাই এসকল ছিনতাই বন্ধ হোক। ঈদের আনন্দ সকলেই চায়’
এবিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) নাজমুল হাসান বলেন, ‘ছিনতাইকারীদের ধরতে আমাদের পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোষাকেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। ঈদে যাতে কারো কোন রকমের অসুবিধা না হয় সেই লক্ষে এসপি স্যারের নির্দেশ মোতাবেক আমরা দিন রাত কাজ করে যাচ্ছি।’