স্বপ্নবাজ তরুণ রিদোয়ানুল হক

মোঃমিনহাজুল ইসলাম শামীম:
ওরে নবীন, ওরে আমার কাঁচা, ওরে সবুজ, ওরে অবুঝ আধমরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যথার্থই বলেছেন নবীনদের প্রচেষ্টায় সমাজ-সভ্যতার অবহেলিত মানুষের জীবনমানের সমস্ত জঙ্গল সরাতে হবে। স্বপ্নবাজ তরুণদের আছে সেই দুর্বার শক্তি।
সুফী কবি কাজী নজরুল ইসলাম যৌবনের গান’ প্রবন্ধে বলেছেন যে চাঁদ সাগরে জোয়ার আনে সে হয়তো তার শক্তি সম্পর্কে আজও নাওয়াকিফ।
শক্তি সবসময় সুফল বয়ে নিয়ে আসে না। মাঝে মাঝে শক্তি পথ ভ্রষ্টভাবে পরিচালিত হয়। বর্তমান তরুণ সমাজের কর্মকাণ্ড বিভিন্নভাবে সমালোচিত ও নিন্দিত হচ্ছে। মানুষের কল্যাণে ব্যবহার হওয়ার বদলে নিজের শক্তিমাত্রা ও অহমিকা প্রকাশে বেশি ব্যবহার হচ্ছে। ধর্মের নামে সন্ত্রাস সৃষ্টি, এইসব যাদের ভাবিয়ে তোলে।ধনী-গরিবের ব্যবধান, আশাহীনদের জন্য আশা জাগানোর প্রত্যয় নিয়ে এখনও কিছু স্বপ্নবাজ সপ্ন দেখে এবং নিজের সবটুকু দিয়ে অবহেলিত জাতিদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাদেরই একজন রিদোয়ানুল হক।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হেল্পিং হ্যান্ড ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ রিদোয়ানুল হক একজন ভ্রমণপিপাসু তরুণ, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর, বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও ঐতিহ্য ঘুরে দেখতে ও গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টারি তৈরি করতে ভালোবাসেন। মুক্ত মনের অধিকারী সমাজকর্মী। জীবন সংগ্রামে চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করেন। পবিত্র নগরী চট্টগ্রামে একটি ধার্মিক সুফী পরিবারে জন্ম তার। বাংলাদেশের স্বনামধন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে জীবন-জীবিকার তাগিদে সুদূর প্রবাস জীবনে চলে যান।
নশ্বর এই পৃথিবী থেকে আমাদের সকলকেই চলে যেতে হবে কিন্তু আমরা এই পৃথিবীতে আসার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র নিজের প্রয়োজন মেটানো নয়। এই পৃথিবীতে আরও বাসযোগ্য এবং মানবিক করে রেখে যাওয়া, আগামী প্রজন্মের জন্য আমাদের দায়িত্ব। আমাদের কর্মের মাঝে যেমন জান্নাত খুঁজতে হবে তেমনি এমন কিছু কাজ রেখে যেতে হবে এই পৃথিবীতে মৃত্যুর পরেও মানুষ মনে রাখবে বা সৃষ্টিকর্তা তার প্রতিদানের বিনিময় আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষা দান করবেন। রিদোয়ানুল হকের হাত ধরে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন সমাজে আলো ছড়াচ্ছে।
তার মধ্যেও প্রথমে বলতে হয় সিগ্যাল কর্পোরেশন অন্যতম। সিগ্যাল কর্পোরেশন দেশ-বিদেশের অর্থনীতিতে এবং কর্মসংস্থানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন এবং বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠনকে আর্থিক সহায়তা করে সিগ্যাল কর্পোরেশন সমাজ উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
রিদোয়ানুল হকে স্বপ্নের আর ও একটা প্রতিষ্ঠান “চ্যানেল ফোর” যার মাধ্যমে বিশ্বকে দেখানোর একটা অপার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
দেশ ও বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং ব্যতিক্রম স্থান এবং অসাধারণ তথ্যভাণ্ডারের সমন্বয়ে একের পর এক সুন্দর ভিডিওর মাধ্যমে দেশী ও বিদেশিদের মধ্য মিলবন্ধনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
দেশ ও বিশ্বের মানুষ কে কাছ থেকে দেখার কারণে তিনি সহজে দেখতে পেয়েছিলেন অবহেলিত মানুষের খাদ্য, শিক্ষা, বাসস্থান, পূরণের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কতটা অসহায় হয়ে যায়।
স্বপ্নবাজ তরুণ রিদোয়ানুল হক এমন একটি সংগঠন তৈরী করবেন- যারা মানুষের মধ্যে ব্যবধান কমাতে কাজ করবে। মমতার হাতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বুকে টেনে নিবে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়ে তাদের মৌলিক অধিকার গুলো কে পূরণে সহায়তা করবে।
প্রবাস জীবনে থেকেও তিনি বাংলাদেশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের গড়ে তুলছেন-
হেল্পিং হ্যান্ড ফাউন্ডেশন যেখান থেকে এখন পর্যন্ত তিন হাজারের অধিক লোকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। দেশকে সবুজায়ন করার জন্য দেড় হাজারেরও বেশি বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। স্বাবলম্বী করার জন্য পাঁচটি পরিবারকে সেলাই মেশিন, দুইটি পরিবারকে মুদির দোকানের জন্য আর্থিক সহায়তা, দশজন এতিম বাচ্চাদের কে শিক্ষা বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে ছয়টি পরিবারকে এবং ছয়টি পরিবারের মাঝে কাঁচা পায়খানা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। দুই হাজারের অধিক লোককে বস্ত্র সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও চিকিৎসা অনুদান দেওয়াছাড়াও প্রায় এক হাজারের অধিক কে মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজনে এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা দান করেছে এবং তিন হাজার এর বেশি লোককে বিনা মূল্যে ফ্রি বই বিতরণ করেছে।
স্বপ্নবাজ তরুণ মোঃ রিদোয়ানুল হক তরুণদের প্রতি একটি পরামর্শ-
নিজের কাজ মনোযোগ দিয়ে করো। অন্যর কথায় কান দিও না।
পারিবারিক জীবনে মোঃ রিদোয়ানুল হক তিন সন্তানের জনক। স্ত্রীর নাম শাহীন আক্তার একজন ওয়েব ডিজাইনার ও গৃহিণী। তিন ছেলেমেয়েদের মধ্যে বড় মেয়ে মোছাঃ ফাতেমা পড়াশোনা করার পাশাপাশি ভালো গান গায় ও একজন ফটোগ্রাফার। বড় ছেলে তাহাবীর বায়ান ও ছোট ছেলে ফারাবী তাদের শৈশব পার করছেন।
পরিবারের সকলকে আল্লাহ নিরাপত্তা দান করুক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button