সংস্কারের উদ্যোগ বিসিবির, আবারো খেলার উপযোগী হবে ফতুল্লা স্টেডিয়াম

অযত্ন অবহেলায় বছরে পর বছর পানির নিচে তলিয়ে থাকা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামটি অবশেষে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তাদের নিজস্ব অর্থায়নেই আপাতত আন্তর্জাতিক ভেন্যুর মর্যাদাপ্রাপ্ত স্টেডিয়ামকে খেলার উপযোগী করে তোলা হবে। এরই মধ্যে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। ২০২৪ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা।

আন্তর্জাতিক খেলা না হলেও সংস্কারের পর ফাস্ট ডিভিশন, সেকেন্ড ডিভিশন, থার্ড ডিভিশন এবং প্রিমিয়ার ডিভিশন খেলার আয়োজন করা হবে। বাকি কাজগুলো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এনএসপি শেষ করবে।

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবির পরিচালক মো. আকরাম ও তানভীর আহমেদ টিটু সরেজমিনে স্টেডিয়াম এবং সংস্কার কাজের পরিদর্শন করে এমনটাই বলেছেন।

আকরাম খান বলেন, আমরা প্লেয়ারদের সুবিধা দিতে চাই। যারা ক্রিকেট খেলছে খেলবে তাদের খেলার সুযোগ দিয়ে থাকি। এর মধ্যে আমরা ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে মাঠ নেওয়ার চিন্তা করছি। এই স্টেডিয়ামে আমাদের অনেক স্মৃতি আছে। অনেক বড় বড় খেলা খেলেছি। যেকোনো কারণেই মাঠটা আমরা প্রোপারলি পাচ্ছিলাম না। কারণ খেলার উপযোগী ছিল না। এটা এনএসপি ঠিক করার কথা। যেহেতু তাদের সময় লাগবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিসিবির টাকায় কাজ শুরু করতে যাচ্ছি। অনেকগুলো ভেন্যুর মধ্যে এটা অন্যতম। মাঠটা যদি আমরা ভালোভাবে তৈরি করে দিতে পারি প্লেয়াররা পাবে। যা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য অনেক উপকার হবে।

আকরাম খান বলেন, মাঠটা আমাদের অনেক উঁচু করতে হবে। যেহেতু বাইরের ড্রেনিং সিস্টেমটা অনেক খারাপ। যতটুকু পারি মাঠটা উঁচু করে খেলার উপযোগী করবো। এ সিজনে পারবো না। নেক্সট সিজনে পারবো। আপাতত মাঠটা খেলার উপযোগী করা হবে। পরে এনএসপি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করা হবে। এখন কাজ শুরু হয়েছে বছর খানেক লাগতে পারে। তারপর ইন্টারন্যাশনাল খেলা দেওয়ার মতো ব্যবস্থা হয়ে যাবে।

তানভীর আহমেদ টিটু বলেন, ক্রিকেট বোর্ড নজর দিয়েছে জেলায় জেলায় খেলার মাঠ দরকার। তারই অংশ হিসেবে এ মাঠ খেলার অবস্থায় ছিল না। সেটাকে খেলার অবস্থায় ফেরাতে বোর্ড সভাপতি বলেছেন। ক্রিকেট বোর্ড নিজস্ব অর্থায়নে বুয়েটের সাজেশন অনুযায়ী চার-ছয় ফুট উঁচু করা হবে। আপাতত ফাস্ট ডিভিশন, সেকেন্ড ডিভিশন, থার্ড ডিভিশন এবং প্রিমিয়ার ডিভিশন খেলার উপযোগী করাই হচ্ছে এখনকার সিদ্ধান্ত।

ক্রীড়াসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০৬ সালের ২৩ মার্চ বাংলাদেশ বনাম কেনিয়ার একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের মাধ্যমে ২৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামটি যাত্রা শুরু করে। একই বছরের ২৮ এপ্রিল বাংলাদেশ বনাম ভারতের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের মাধ্যমে শেষ হয় একদিনের ম্যাচের ইতিহাস।

২০০৬ সালের ৯-১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ বনাম অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার টেস্ট ম্যাচ শুরু হয় স্টেডিয়ামটিতে। ২০১৫ সালের ১০-১৪ জুন বাংলাদেশ বনাম ভারতের খেলার মাধ্যমে শেষ হয় এই স্টেডিয়ামের টেস্ট ম্যাচের ইতিহাস। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ কখনো মাঠে গড়ায়নি। এরপর মাঠটিতে দু-একটি ক্লাবের খেলা ও বিভিন্ন টুর্নামেন্টের খেলা অনুষ্ঠিত হলেও মাঠের চারদিকে পানির কারণে সেটাও বন্ধ আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button