নতুন কারিকুলাম বাতিল ও পরীক্ষাপদ্ধতি চালুর দাবিতে “উদ্বিগ্ন অভিভাবক বৃন্দ”র উদ্যোগে মানববন্ধন
বিস্তারিত….
৯’ ডিসেম্বর ২০২৩
শেখ মঈনুল আজাদ
ন্যায়ের আলো
নতুন কারিকুলাম বাতিলের দাবি ও পরীক্ষাপদ্ধতি চালুর দাবিতে
“উদ্বিগ্ন অভিভাবক বৃন্দ”র উদ্যোগে আজ ৯ডিসেম্বর, শনিবার বিকাল চারটায় চট্টগ্রাম নগরীর প্রেস ক্লাব এর সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মাসুদ খান মুন্নার সভাপতিত্বে ও ইকবাল মাসুদ এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, শিশু কিশোর মেলার সংগঠক রিপা মজুমদার, বিহঙ্গের সংগঠক এ্যানি চৌধুরী, প্রাক্তন শিক্ষক জাহিদ উন নবী কনক সহ আরো অনেক অভিভাবকগণ।
বক্তারা বলেন,নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী ৯ম ১০ম শ্রেণিতে আলাদা বিভাগ অর্থাৎ মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসা শিক্ষা থাকবেনা। আমরাও একটি স্তর পর্যন্ত সমন্বিত শিক্ষা চাই। কিন্তু সরকার যা চালু করেছে তা সমন্বিত শিক্ষার বদলে খন্ডিত শিক্ষা। এতে বিশেষত বিজ্ঞান শিক্ষা সংকুচিত হবে। বর্তমান ছাত্ররা পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান আলাদা বিষয়ে ৩’শ নম্বর পড়ে। শিক্ষাক্রম অনুসারে একটি বইয়ে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ১’শ নম্বরে পড়বে। এর মানে হলো বিজ্ঞান শিক্ষার মান নামিয়ে দেওয়া। এমনিতে ক্রমান্বয়ে বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষা সংকুচিত হচ্ছে, তার উপর এই পদক্ষেপ বিজ্ঞান শিক্ষাকে পঙ্গু করে দেবে। এখন শিক্ষার্থীদের উচ্চতর গণিত পড়তে হয়, কিন্তু নতুন শিক্ষাক্রমে তা বাদ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়ে শিক্ষার্থীরা থেকে যাবে অজ্ঞ। ফলে উচ্চ শিক্ষায় যখন যাবে; তখন বিজ্ঞান শিক্ষা হয়ে উঠবে তার কাছে দূর্বোধ্য। এর ফলে মৌলিক বিজ্ঞান চর্চা রুদ্ধ হবে। বিজ্ঞানী, গবেষকদের বদলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করবে একদল কারিগরি দক্ষতা সম্পন্ন মানুষ।
নম্বর ভিত্তিক মূল্যায়নকে তুলে দিয়ে ত্রিভুজ, বৃত্ত, চতুর্ভুজ চিহ্নভিত্তিক মূল্যায়ন চালু করা হয়েছে। পরীক্ষা ও মূল্যায়ন পদ্ধতিকে গুরুত্বহীন করার নেতিবাচক প্রভাব শিক্ষার্থীদের উপর মারাত্মক ভাবে প্রভাব পড়েছে। শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবই ও পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। ফলে লিখতে ও পড়তে পারার সক্ষমতা কমছে এবং বিশ্লেষণী ক্ষমতা ও ভাষাগত দক্ষতা ক্রমশ দূর্বল হচ্ছে। এসবের জন্য উপকরণ কিনতে অভিভাবকদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। যা শিক্ষা ব্যয়কে বাড়িয়ে তুলছে। যা নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত অভিভাবকদের জন্য নতুন বোঝা। প্রজেক্ট ও অ্যাসাইনমেন্টের বিষয়বস্তু এমনভাবে সাজানো হয়েছে যা পাঠ্যপুস্তকের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এর ফলে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা হচ্ছে গুগল, ইউটিউব সহ অন্যান্য অনলাইন মাধ্যমে দ্বারস্থ হতে। দীর্ঘসময় শিক্ষার্থীরা মোবাইল, ল্যাপটপে যুক্ত থাকায় অনলাইন আসক্তি বাড়ছে যা শিক্ষার্থীদের উপর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এর উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
বক্তারা এ নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল না করলে ভবিষ্যতে আরো জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।