নারায়ণগঞ্জের গাছ কাটার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে প্রতিবেশ আন্দোলন
নারায়ণগঞ্জের ৩নং খেয়াঘাটের পাশে বটগাছ কাটার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে প্রতিবেশ আন্দোলন।
২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ বিকেলে কেটেফেলা বটগাছের সামনে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার সাধারণ মানুষ।
এসময় গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন বলেন, জালিম ও যুদ্ধবাজ সরকার নিজের খোলস আড়াল করার জন্য উন্নয়নকেই অন্যতম পন্থা হিসেবে বেছে নিয়েছে বিশেষত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ১৯৪৫ সালের পর থেকে। আর সে উন্নয়ণের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ দিনকে দিন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হচ্ছে। দিনে দিনে সমস্ত উন্নয়ণ দেশের মানুষের বুকে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসছে। শুধু কি চেপে বসেছে? দেশের মানুষের ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে বিরাট বিরাট ঋণের বোঝা! উন্নয়ণের নামে প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ বিনাশী বিরাট বিরাট প্রকল্প হাতে নিয়ে একদিকে নিজের আখের গোছাচ্ছে আর দিকে চেহারা আড়াল করছে। ভাবটা এমন যেন, উন্নয়ণ আমাদের একমাত্র ভবিষ্যৎ। তাই কতটা তাড়াতাড়ি এ লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়, এ জন্য সবাই মিলে প্রাণপাত করাটাই দেশ ও দেশের মানুষের একমাত্র কাজে পরিণত করার চেষ্টা করছে। যেন এটি একটি পবিত্র দায়িত্ব, এক মহান লক্ষ্য; যার অর্জনের জন্য মানুষ, প্রকৃতি, সামাজিক রীতিনীতি, বন্ধন, সম্পর্কসহ প্রায় সব কিছুই বিসর্জন দেওয়া যায়।
শিক্ষাব্যবস্থা ও গণমাধ্যম- এ ধরনের উপলব্দি আমাদের মনে গেঁথে দিতে নিদারুণ অবদান রেখে চলেছে! উন্নয়ন হবার কথা ছিল মানুষের সব সুপ্ত সম্ভবনা ও আকাঙ্ক্ষার ক্রমপূর্ণতার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।
তার চেয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটা হচ্ছে সাংস্কৃতিক হীনম্মন্যতা। দীর্ঘ ঔপনিবেশিক শাসন আমাদের সম্পদ যা লুট করেছে, তার বাহ্যিক দিকটাই আমরা সাধারণত আলোচনা করি- প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক ইত্যাদি। কিন্তু আমাদের অন্তর্জগতে যে লুটপাট হয়েছে, তা আরও ভয়ঙ্কর। আর সেই লুটপাটের ফলাফল হিসেবে উন্নয়ণ বলতেই আমরা বুঝি বিশাল বিশাল অবকাঠামো। প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশকে প্রাধান্য দিয়ে যে উন্নয়ণ হতে পারে তা সেটা আমাদের বোধে আসে না। আকাশ ঢেকে দিয়ে, পাখির আবাস নষ্ট করে, বন উজাড় করে, নদী মেরে ফেলে, প্রাণের স্পন্দন থামিয়ে চোখ ঝলসে দিয়ে আলো ঝলমল দানবীয় ভবন না করলে এখানে উন্নয়ণ হয় না! কি নিদারুণ এই উন্নয়ণের ফাদঁ! এই ফাদেঁ পড়েই মরে যাচ্ছে প্রাণের স্পন্দন।