কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবি
কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিতব্য ওলামা মাশায়েখ ও সুধি সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২০ অক্টোবর) সকাল ৯ টায় আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় কার্যালয় জামিয়া ইসলামিয়া মাখজানুল উলূম খিলগাঁওয়ে উক্ত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদ বাংলাদেশের সদস্য সচিব মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী।
বৈঠকে আগামী ২৪ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার, সকাল ৯ টায়, রাজধানী ঢাকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (আইডিইবি) মিলনায়তনে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদ বাংলাদেশ ওলামা মাশায়েখ ও সুধি সম্মেলন এর যেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, সেই সম্মেলন সুষ্ঠুভাবে সফল ও স্বার্থক করতে গঠিত বাস্তবায়ন কমিটির কারগুজারী শোনা হয়। এ সময় সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটি জানান, তাদের একটি প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম জেলায় সফর করে সেখানের শীর্ষ মুরুব্বি আলেমদের নিকট দাওয়াত পৌঁছেছেন। এছাড়া বাস্তবায়ন কমিটির দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ সারাদেশে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এখনো দাওয়াতী কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।
বৈঠকে বাস্তবায়ন কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান, তারা রাজধানী ঢাকা ও তার আশপাশ এলাকাসহ দেশব্যাপী চলা দাওয়াতী কার্যক্রম চলমান রেখেছেন। সে সময় সংগঠনের সদস্য সচিব মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী বাস্তবায়ন কমিটির দায়িত্বশীলদের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে বলেন, এখন যেই সব স্থানে দাওয়াত পৌঁছানো হয়নি, সে সব স্থানে দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ দ্রুত সময়ে দাওয়াতী পয়গাম পৌঁছাবেন, ইনশা-আল্লাহ।
মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী আহুত সম্মেলনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে আরও বলেন, জীবনের সর্বক্ষেত্রে ‘আক্বিদায়ে খতমে নবুওয়ত’ এর মাসআলা বর্ণনা করা এবং শক্ত ও মজবুত হাতে তা রক্ষার কাজ গুরুত্বের সাথে আঞ্জাম দেওয়া ওয়ারিসে নবী হিসেবে প্রত্যেক আলেমের ঈমানী দায়িত্ব। একইসাথে আখেরী নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সা. এর উম্মত হিসেবে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আমৃত্যু খতমে নবুওয়তের আক্বিদা ও বিশ্বাস নিজের মাঝে লালন ও ধারণ করা ইসলামের অত্যাবশ্যকীয় বিধান। এই আক্বিদার ব্যাপারে কেউ সামান্য ছাড় দিলে বা বিন্দুমাত্র সন্দেহ পোষণ করলে কিংবা এই আক্বিদা অস্বীকারকারী কাউকে অমুসলিম মনে না করলে তার ঈমান থাকবে না। আক্বিদায়ে খতমে নবুওয়ত হেফাজতের কাজের চেয়ে মুসলিম উম্মাহ’র জন্য বড় কোনো কাজ নেই। খতমে নবুওয়তের আক্বিদা রক্ষা করাই মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং কেয়ামতের কঠিন দিনে আল্লাহ’র রাসূল সা. এর শাফায়াত লাভের অমূল্য অজিফা।
তিনি আরও বলেন, আল্লাহ’র রাসূল সা. এর খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ না থাকলে শরীয়তের বিধিনিষেধ, হালাল-হারামের হুকুম-আহকামসহ নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি ইসলামি কোনো পরিভাষা আর সংরক্ষিত থাকবে না। তাই রাসূল সা. খতমে নবুওয়তের মসনদ রক্ষার্থে আহমদিয়া জামাত নামধারী মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর অনুসারীর দল তথা; কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের ঈমান বিধ্বংসী ভ্রান্ত মতবাদের ব্যাপারে দেশবাসীকে সজাগ ও সচেতন আলেম ওলামাদেরকে করতে হবে। বিশেষভাবে মুসলমানদের ঈমান হরণে তারা যে সমস্ত দুনিয়াবী প্রলোভন দেখিয়ে কূটচাল চালে এবং যে সমস্ত মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যের মাধ্যমে ধোঁকায় ফেলে উম্মাহ গোমরাহ বানানোর অপ্রচেষ্টা চালায়, সে সমস্ত অপকৌশল ও অপতৎপরতার ফেৎনা-ফাসাদ রুখতে আলেমদেরকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তাই আমরা এই ব্যাপারে গণ-সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদ বাংলাদেশ এর ব্যানারে দেশের সকল খতমে সংগঠন একতাবদ্ধ হয়ে ওলামা মাশায়েখ ও সুধি সম্মেলন এর আয়োজন করতে যাচ্ছি।
এ সময় মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী সম্মেলনের প্রস্তুতির ব্যাপারে আশ্বস্ত করে বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, ইতোমধ্যে আমাদের সম্মেলনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়ে গেছে। আমরা সর্বত্র আহুত সম্মেলনের ব্যাপারে আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছি। আমরা আশাবাদী, আগামী ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ইং, বৃহস্পতিবার, সকাল ৯ টায়, রাজধানী ঢাকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (আইডিইবি) মিলনায়তনে কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে- সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদ বাংলাদেশ এর ব্যানারে অনুষ্ঠিতব্য ওলামা মাশায়েখ ও সুধি সম্মেলনে দেশের সর্বস্তরের ওলামা মাশায়েখ, সুধী সমাজ ও আপামর তৌহিদী জনতা স্বতস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করবেন। আমরা উক্ত সম্মেলন সফল করার জন্য দেশের সর্বস্তরের ওলামা কেরামসহ নবীপ্রেমিক মুসল্লিদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
এ সময় বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা জহুরুল ইসলাম, মাওলানা রশীদ আহমাদ, মাওলানা মীর ইদরিস, মুফতী কিফায়াতুল্লাহ আজহারী, মুফতী শিব্বির আহমাদ কাসেমী, মুফতী শুয়াইব ইব্রাহিম, মাওলানা আশেকুল্লাহ, মাওলানা ইউনুস ঢালী, মাওলানা রাশেদ বিন নূর, মাওলানা আব্দুল লতিফ ফারুকী, মাওলানা আফসার মাহমুদ, মুফতী আল আমীন ফয়জী, মাওলানা আবুল কাশেম আশরাফী, মুফতী শফিক সা’দী, মাওলানা হুসাইন আহমাদ ইসহাকী, মাওলানা ফয়জুল্লাহ ফাহাদ, মাওলানা বেলায়েত হুসাইন ফিরোজী, মাওলানা আমিরুদ্দীন ফয়জী, মাওলানা ফরিদুল ইসলাম, মাওলানা এনামুল হক আজাদী প্রমুখ।