বিএনপির পদযাত্রা গণতন্ত্রের জয়যাত্রা: মির্জা ফখরুল ইসলাম
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত পদযাত্রাকে গণতন্ত্রের জয়যাত্রা বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ফখরুল বলেছেন, আমাদের এই পদযাত্রা গণতন্ত্রের জয়যাত্রা, আমাদের এই পদযাত্রা সভ্যতার জয়যাত্রা, আমাদের এই পদযাত্রা মানুষের অধিকার আদায় করার জয়যাত্রা, আমাদের এই পদযাত্রা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জয়যাত্রা, এই পদযাত্রা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জয়যাত্রা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেছে। তারা এখন প্রমাদ গুনছে। তারা প্রতিদিন জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। আজকে চালের দাম কত হয়েছে? দশ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে বলেছিল না? এখন কত খাচ্ছেন? ডালের দাম কত, লবনের দাম কত, আটার দাম কতো? পুরান ঢাকাসহ সারাদেশে গ্যাস নেই। সব খেয়ে ফেলেছে। বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়েছে। দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটছে। এরপর সেই টাকা তারা লুট করে বিদেশে পাচার করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগ নাকি পালায় না। এখানে গয়েশ্বর চন্দ্র আছেন, ভালো বলতে পারবেন। এক এগারোতে কারা কারা পালিয়েছিল সবাই জানে। কিন্তু পালায়নি একজন তিনি হলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া। তিনি পরিষ্কার বলেছিলেন বিদেশে আমার কোনো জায়গা নেই। এই দেশ আমার, এই মাটি আমার। আমার জন্ম এখানে, মরলেও এখানে মরবো। এ দেশের মানুষ সব জানে। কে কখন কোথায় পালায়, কেমন করে পালায় সবাই জানে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখনও সময় আছে। গত ১৪/১৫ বছর ধরে দেশের মানুষের ওপর যে অত্যাচার করছেন সেই অত্যাচারে মানুষের পিঠ এমনভাবে দেয়ালে ঠেকে গেছে, আপনারা আর কোনো রাস্তা খুঁজে পাবেন না। ওবায়দুল কাদের সাহেব, পালাবেন কোন দিকে। একটা কবিতা আছে- কোন দিকে পালাবে তুমি। কোনো দিকে পালাবার পথ নাই। উত্তরে উত্তর পর্বতমালা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। কোন দিকে পালাবে তুমি। এখনও বলছি, সময় আছে, আমাদের ১০ দফা দাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করুন। সংসদ বাতিল করুন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান আবার চালু করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে, নতুন নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে একটা নির্বাচন করুন, যে নির্বাচনে জনগণ অংশগ্রহণ করতে পারবে, ভোট দিতে পারবে।
ফখরুল বলেন, গত দুইটা নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন? কেউ ভোট দেয়নি। নিজেরা ভোট করেছে। একটা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, আরেকটা করেছে আগের রাতে। এই ভোট আর জনগণ চায় না।
তিনি আরও বলেন, এই যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমাদের এমপি সাত্তার সাহেব পদত্যাগ করলেন। তারপর তিনি নিজে থেকে ভোট করতে গেলেন। আমরা তাকে বহিষ্কার করলাম। এখন তাকে জয়লাভ করানোর জন্য সমস্ত নীতি নৈতিকতা বাদ দিয়ে আপনারা আপনাদের প্রার্থীকে প্রত্যাহার করেছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীকে দু’দিন ধরে পাওয়া যাচ্ছে না, গুম। সাত্তারকে জেতাতে সমস্ত নির্বাচন ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছেন। আপনারা মাগুরার কথা বলেন? ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মাগুরার দাদা বানিয়েছেন। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না।
মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালামের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় পদযাত্রাপূর্ব সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপি নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আজিজুল বারী হেলাল, মীর সরাফত আলী সপু, নবী উল্লাহ নীব, ইশরাক হোসেন, সাইফুল আলম নীরব, মীর নেওয়াজ আলী, হাবিবুর রশীদ হাবিব, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, তানভীর আহমেদ রবিন প্রমুখ।