শিক্ষাকে রাজনীতির হাতিয়ার বানানো কি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক নেতাদের বসানো
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি পদে কেন রাজনৈতিক নেতাদের বসানো হবে? এটি কি শিক্ষার উৎকর্ষতা বৃদ্ধির জন্য, নাকি শিক্ষাকে রাজনীতির হাতিয়ার বানানোর জন্য? এ বিষয়ে সাক্ষাৎকারে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন বিশিষ্টজনরা তারা বলেন আমরা বিগত সময় থেকে দেখে এসেছি বিভিন্ন সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক সভাপতির সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের মাঝে দলীয় বিভক্তি তৈরি হয় শিক্ষা ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধি এ পেয়ে সংঘর্ষ অস্থিরতা এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটোনা বেড়ে যায় যা শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য কে ব্যাহত করে বলে জানান নেটিজনরা
১। শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা
২। যোগ্যতার চেয়ে রাজনৈতিক পরিচয় কে অগ্রাধিকার দেওয়া
৩। শিক্ষাকে দলীয়করণ করার প্রবণতা
৪। শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন ব্যাহত হওয়া!
৫।শিক্ষাবিদদের সভাপতি হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া নারায়ণগঞ্জ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যুগ্ম আহবায়ক শাকিল সাইফুল্লাহ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো জ্ঞান অর্জনের স্থান, যেখানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা নিরপেক্ষ পরিবেশে শিক্ষা ও গবেষণা চালিয়ে যান। কিন্তু যখন একজন রাজনৈতিক নেতা সভাপতি হন, তখন শিক্ষার পরিবেশ রাজনীতির দ্বারা প্রভাবিত হয়। ছাত্রদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়, দলীয়করণ বাড়ে এবং সত্যিকারের শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ নষ্ট হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক জাহিদুল হক বাঁধন বলেন-একজন সভাপতির দায়িত্ব হলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, প্রশাসনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং শিক্ষার মান উন্নত করা। কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেরই এ ধরনের প্রশাসনিক দক্ষতা বা শিক্ষাক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা থাকে না। তাদের মূল লক্ষ্য হয় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করা, যা প্রতিষ্ঠানের উন্নতির পরিবর্তে অবনতি ঘটাতে পারে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্য সচিব মোঃ অনিক বলেন- যখন রাজনৈতিক ব্যক্তিরা সভাপতি হন, তখন শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত দলীয় স্বার্থে পরিচালিত হয়। এতে মেধার চেয়ে রাজনৈতিক আনুগত্য বেশি গুরুত্ব পায়, যার ফলে শিক্ষার মান ক্রমশ নিম্নগামী হতে থাকে। একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, রাজনৈতিক সভাপতির উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের মাঝে দলীয় বিভক্তি তৈরি হয়। শিক্ষা ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধি পেলে সংঘর্ষ, অস্থিরতা এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনা বেড়ে যায়, যা শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যকেই ব্যাহত করে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য তুহিন মাহমুদ বলেন,একজন সভাপতির প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করা। তাই এ দায়িত্ব শিক্ষাবিদ, গবেষক, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তি বা সমাজের বিজ্ঞজনদের দেওয়া উচিত, যারা প্রকৃতপক্ষে শিক্ষার উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখা প্রয়োজন। এখানে শুধু শিক্ষার আলো ছড়ানো উচিত, কোনো রাজনৈতিক স্বার্থ বাস্তবায়ন করা উচিত নয়। তাই আমরা জোরালোভাবে দাবি জানাই, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতির পদে রাজনৈতিক নেতাদের নয়, বরং প্রকৃত শিক্ষানুরাগী ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হোক, যেন শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব হয় এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা পায়।