বিশেষ সংবাদ

পিঠা উৎসবে মুখরিত সফর আলী ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে সফর আলী ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্কুল প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের এ মিলন মেলায় বর্তমান শিক্ষার্থীদের হাতে বানানো পিঠা খেয়ে আমন্ত্রিত অতিথিরা মুগ্ধ হন।

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩ টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে চলে এই পিঠা উৎসব। এদিন সকাল থেকেই বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে বিভিন্ন ঐতিহ্যগত নামে বিভিন্ন শ্রেণী ও বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্টলগুলো বাহারি রঙ্গে সেজে উঠে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পৃথক পৃথক বুথে নানা রকম পিঠাপুলির পসরা সাজিয়ে রাখা আছে। এর মধ্যে কতিপয় পিঠা একেবারেই নতুন আবার কিছু অতিপরিচিত। প্রতিটা পিঠার ওপরে লেখা আছে পরিচিতি নাম। এসব পিঠার নামও বেশ বাহারি। শিশুরা বাবা-মায়ের হাত ধরে ঘুরে দেখছেন স্টল। জানছেন নতুন নতুন পিঠা সম্পর্কে। পিঠা উৎসবে ০৮টি পৃথক স্টলে ছিল ভাপাপুলি, দুধপুলি, পুলি, ঝিনুক, পাটিসাপটা, জামাই সোহাগী, গোলাপ, চিতই, পায়েস, পুডিং, তেল পিঠা, দুধ চিতই, ফুল পিঠা, ক্ষির, মুঠা পিঠা, নাড়ু, লাড্ডু, রস পিঠা ও কেকসহ অর্ধশতাধিক পিঠাপুলি।

বর্তমান শিক্ষার্থীরা স্কুল ড্রেস এবং প্রাক্তণ শিক্ষার্থীরা রঙ-বেরঙয়ের জামা-কাপড় পড়ে স্টলে আসতে শুরু করে এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নেচে-গেয়ে স্কুল প্রাঙ্গণে উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি করে। এসময় বিদ্যালয়ের বাহিরে এবং মাঠ প্রাঙ্গণের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের উপস্থিতিতে এই মিলন মেলা কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠে। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা গ্রুপ ভিত্তিক আলাদা-আলাদা স্টল স্থাপন করে। স্টলগুলোতে সাজানো হয় শিক্ষার্থীদের হাতে বানানো প্রায় ৪০ ধরনের পিঠা। রকমারি নানা পিঠা নজর কাড়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের। অতিথি ও শিক্ষকরা ঘুরে ঘুরে স্টলগুলো পরিদর্শন করেন এবং পিঠা খেয়ে শিক্ষার্থীদের আনন্দিত করেন।

নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের স্কুলে এই প্রথম এত সুন্দর একটা আয়োজন করেছে। এখানে অনেক রকম পিঠার সঙ্গে পরিচিত হলাম। নতুন নতুন পিঠা খেলাম। অনেক ভালো লাগছে।

সফর আলী ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদা আশরাফী (রিনা) বলেন,নতুন প্রজন্মকে বাঙালীর লোকজ সংস্কৃতির ছোঁয়ায় বড় করে তুলতে হবে। নিজ জাতির সংস্কৃতি জানলেই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের প্রতিটি শিশু সফল হবে। তারাই দেশকে সফল করবে। তিনি বলেন বাঙালীর একটি অত্যন্ত মূল্যবান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। এটা প্রজন্মের প্রতিটি শিশুকে জানাতে হবে।

পিঠা উৎসবে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা ও মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার বিল্লাল হোসেন রবিন। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক মোঃশফিকুল ইসলাম, দৈনিক স্বাধীন বাংলাদেশ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক আহসানুল হাবিব সোহাগ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও বিদ্যালয় কার্যকরী কমিটির সদস্য হোসেন আলম মেম্বার, দৈনিক বজ্রধ্বনি’র সিদ্ধিরগঞ্জ থানা প্রতিনিধি ইসমাইল হোসেন রাফি, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামিলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন সিনিয়র শিক্ষক ও কার্যকরী কমিটির সদস্য আমেনা খাতুন, প্রাক্তন সিনিয়র শিক্ষিকা পেয়ারা বেগম, সহকারী প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানা, সিনিয়র শিক্ষক রহিমা মল্লিক, সহকারী শিক্ষিকা মাহমুদা আক্তার সহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, অভিভাবকবৃন্দ এবং সাবেক – বর্তমান শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button