মুন্সীগঞ্জে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন হওয়া লাশটি স্থপতি ইমতিয়াজের

মুন্সীগঞ্জে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা লাশটি নিখোঁজ স্থপতি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়ার বলে নিশ্চিত করেছেন তার স্বজনরা। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের উপস্থিতিতে কবর থেকে লাশ উত্তোলনের পর তারা শনাক্ত করেন।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুস সামা উপস্থিতি থেকে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেন। নিহত ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়া (৪৭) ঢাকার তেজগাঁও থানার এলাকার বাসিন্দা। মা, স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে তেজগাঁও এলাকায় নিজ মালিকানাধীন ফ্লাটে বসবাস করতেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর এলাকায়।

এর আগে, ৭ মার্চ বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পরদিন ৮ মার্চ তার স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সেদিন ৮ মার্চ বিকালে সিরাজদিখানের চিত্রকোট কামারকান্দা এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে সিরাজদিখান থানা পুলিশ।

পরদিন ৯ মার্চ সকালে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে লাশটি আঞ্জুমান মুফিদুলে হস্তান্তর করে। ৯ মার্চ বেওয়ারিশ হিসেবে লাশটি মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার গোরস্থানে দাফন করা হয়। নিহত স্থপতি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ নিখোঁজের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার হলে সেখানে থেকে স্বজনরা জানতে পারেন। পরে তারা সিরাজদিখান থানায় এসে যোগাযোগ করলে লাশের চেহারা ও পরনের জামার সঙ্গে নিখোঁজ ইমতিয়াজের মিল ছিল বলে জানান। স্বজনরা দাবি করেন, মুন্সীগঞ্জে দাফন করা লাশটি ইমতিয়াজের।

স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার বলেন, যেদিন আমরা লাশটি প্রথম দেখি, সেদিনই বলেছিলাম এটি আমাদের ইমতিয়াজের। আমরা লাশ নিয়ে এখন গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় যাবো। সেখানে কবর খননের কাজ চলছে। ইমতিয়াজকে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে তার বাবার পাশে দাফন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আমার খুব মন চেয়েছিল, যেদিন ওকে খুঁজে পাবো অনেক জোরে কিছুক্ষণ আমি জড়িয়ে ধরে রাখবো। কত কষ্ট আমি করেছি তোমাকে খুঁজেছি। আমি কোথায় কোথায় না গিয়েছি, কিন্তু এই কথাগুলো বলার সুযোগ আমার আর হয়ে উঠলো না।

এই বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, সিরাজদিখানে গত ৮ মার্চ একটি অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার তদন্তভার আমাদের গোয়েন্দা পুলিশকে দেওয়া হয়। আজ বিকালে আদালতে মাধ্যমে নিহতের লাশ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। পরে লাশ নিহতের স্ত্রী ফাহমিদা আক্তারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button