শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের শিক্ষার্থী নির্যাতন ও সাংবাদিকদের উপর হামলার নিন্দা ছাত্র ফেডারেশনের
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেলে ছাত্রলীগ কর্তৃক শিক্ষার্থী নির্যাতন ও সংবাদকর্মীদের ওপর মেডিকেল কলেজ শিক্ষকদের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন
আজ ২৭ আগষ্ট সকাল ১০ টায় বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন বরিশাল জেলার সহ-সভাপতি হাছিব আহমেদ ও সাধারন সম্পাদক রাইদুল ইসলাম সাকিব সংগঠনের বরিশাল জেলা কার্যালয়ে এক যুক্ত বিবৃতিতে গত ২৩ আগষ্ট রাতে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেলের ৬০৬ নম্বর কক্ষে এক শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগ কর্তৃক হেনস্থা এবং গতকাল ২৬ আগষ্ট সংবাদ সংগ্রহর জন্য উপস্থিত সাংবাদিকদের ওপর শিক্ষক কর্তৃক হামলার তীব্র নিন্দা জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, “শের-ই- বাংলা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হলের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভা ও সহ-সম্পাদক জুই মিলে তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে গত ২৩ আগষ্ট গভীর রাতে দুই দফায় হলের একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে দীর্ঘ সময় দাঁড় করিয়ে রেখে গালাগাল, হুমকি এবং মোবাইল ফোন তল্লাশি সহ মানসিক হেনস্থা করেন। এক পর্যায়ে ভীত হয়ে ঐ শিক্ষার্থী অচেতন হয়ে পড়লে তাঁকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে নির্যাতনের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য ছাত্রলীগ কর্তৃক ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এর ধারাবাহিকতায় গতকাল সংবাদকর্মীরাখবর সংগ্রহের জন্য মেডিকেল কলেজে গেলে অধ্যক্ষের কক্ষে শিক্ষক কর্তৃক সময় টেলিভিশনের রিপোর্টার শাকিল মাহমুদ, চিত্র সাংবাদিক সুমন হাসানসহ চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের স্টাফ রিপোর্টার কাওছার হোসেন রানা, চিত্র সাংবাদিক রুহুল আমিন, এশিয়ান টেলিভিশনের রিপোর্টার ফিরোজ মোস্তাফা ও চিত্র সাংবাদিক আজিম শরিফ এবং বাংলানিউটোয়েন্টিফোর.কমের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট মুশফিক সৌরভকে লাঞ্ছিত করেন। মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক ডা. সৈয়দ বাকী বিল্লাহ ও প্যাথলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার সাহা সাংবাদিকদের চড়-থাপ্পর, ধাক্কা ও পরে চেয়ার দিয়ে পেটানোর মত ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।”
নেতৃবৃন্দ বলেন, “শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় ভুক্তভোগীর পক্ষে না দাড়িয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের উপস্থিতে কলেজ প্রশাসন সাংবাদিকদের ওপর হামলে পড়ায় এটাই প্রমানিত হয় যে তারা ঘটনার ধামাচাপা দিতে চাইছেন। কলেজ প্রশাসন মিডিয়া ব্রিফিং এ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তার পরিবার কে মানসিক অসুস্থ বলে অবিহিত করে নির্যাতনকারীর পক্ষে সাফাই গাইছেন। ছাত্রলীগ কর্তৃক শিক্ষার্থী নির্যাতন নতুন কিছু নয়। তারা সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী রাজত্ব কায়েম করেছে। তাই সারাদেশের ছাত্র সমাজকে এই সন্ত্রাসী সংগঠনের কার্যকলাপ বন্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
নেতৃবৃন্দ ঘটনার ৩ দিন অতিবাহিত হলেও নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা না নিতে পারার ব্যার্থতা ও সাংবাদকর্মীদের ওপর হামলায় নৈতিক স্খলনজনিত কারনে অধ্যক্ষ ও হামলাকারী শিক্ষকদের অপসারণের দাবি জানায়। একই সাথে শিক্ষার্থী নির্যাতনের সাথে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও নিপিড়ন বিরোধী সেল গঠনের আহ্বান জানান।