নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সাথে গণসংহতি’র বৈঠক
আজ ৮ আগষ্ট, সকাল ১১ টা ৩০ মিনিটে গণসংহতি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করেছেন এবং বর্তমান অশান্ত নারায়ণগঞ্জকে স্থিতিশীল করার জন্য জেলা প্রশাসককে ১০ টি বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেবার আহ্বান জানিয়েছেন
। ১. ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহতদের ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সব্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে এবং আন্দোলনে আহত ও নিহতদের সঠিক তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
২. ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোড়াল বা স্মৃতিফলক নির্মাণ করতে হবে।
৩. সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে দালাল ও দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে।
৪. বাজার নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেট ভেঙ্গে নিয়মিত মনিটরিং চালু করতে হবে।
৫. নারায়ণগঞ্জকে শান্ত এবং স্থিতিশীল করার জন্য চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ড ত্বকী-চঞ্চল-আশিক-বুলু-মিঠু হত্যার বিচার শুরু করতে হবে এবং সকল মিথ্যা ও রাজনৈতিক মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে।
৬. অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে এবং কিশোর গ্যাং এর শেল্টারদাতাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। নারায়ণগঞ্জকে মাদকমুক্ত করতে হবে।
৭. পরিবহন খাতে চাদাঁবাজি-নৈরাজ্য বন্ধ করে বাসভাড়া কমাতে হবে। বিআরটিসি বাসের সংখ্যা বাড়াতে হবে এবং ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
৮. পোশাক শিল্প খাতে জুট সন্ত্রাস ও সকল প্রকার চাঁদাবাজি বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
৯. প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে নিয়মিত তদারকি এবং সরকারী হাসপাতালগুলোর সেবা ও মান বৃদ্ধি করতে হবে এবং দালাল ও সিণ্ডিকেট ভেঙ্গে দেবার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।
১০. খাল-বিল-মাঠ ও সরকারী সম্পত্তি দখলমুক্ত করে জনকল্যানে ব্যবহার করতে হবে।
এসময় গণসংহতি আন্দেলনের সমন্বয়কারী বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার। যার জন্য ৩০ লক্ষ মানুষ এবং ২ লক্ষ নারী যৌন নিপীড়ন সহ্য করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। স্বাধীনতার পরে ক্ষমতার হাত বদল হয়েছে, কিন্তু মানুষের কাঙ্গিত স্বাধীনতা অর্জিত হয় নি। দেশের মানুষ বার বার অত্যাচার নিপীড়নের শিকার হয়েছে। আমাদের সমস্ত অর্জনের উপর ভর করে ব্যাক্তি বিশেষ এবং কতিপয় গোষ্ঠী সুবিধা নিয়েছে এবং একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা বার বার বেহাত হয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা পুনরায় বাস্তবায়িত হবার আশা সকলের মনে সঞ্চার করেছে। আমরা মনে করি, শহীদের রক্তের উপর দাড়িয়ে এই বাংলাদেশ আবার ঘুরে দাঁড়াবে এবং তার জন্য দরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ। আমাদের দল গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জকে শান্ত এবং স্থিতিশীল দেখতে চায়। দেখতে চায় গুম-খুন, ভয়-আতঙ্কমুক্ত, সন্ত্রাস ও দখলদারমুক্ত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সহাবস্থান। তথাপি একটি বাসযোগ্য নারায়ণগঞ্জ। তার জন্য আশু নিচের ১০ টি দাবিকে বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আহ্বান জানাই। নারায়ণগঞ্জের অভিভাবক হিসেবে আপনার প্রতি আমাদের আহ্বান দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবেন।
এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, জেলা কমিটির নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, মহানগর কমিটির সমন্বয়কারী নিয়ামুর রশীদ বিপ্লব, মহানগর কমিটির নির্বাহী সমন্বয়কারী পপি রানী সরকার, জেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য আলমগীর হোসেন আলম, নাজমা বেগম, মামুন হোসেন এবং বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের জেলা সভাপতি এবং বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারী ফারহানা মানিক মুনা। জেলা প্রশাসক গণসংহতি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করেন বিষয়গুলো তিনি দেখবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।