আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করলেন বিএনপি মহাসচিব
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়া বাবনপুর গ্রামে তার বাড়িতে গিয়ে কবর জিয়ারত করেন। জিয়ারত শেষে নিহতের বাবা মকবুল হোসেন ও মা মনোয়ারা বেগমসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। পাশাপাশি বিএনপি সবসময় আবু সাঈদের পরিবারের পাশে থাকবে বলে আশ্বাস দেন।
এ সময় আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন তার ছেলেকে পাখির মতো গুলি করে হত্যার অভিযোগ তোলেন। এখনও খুনিদের কাউকে গ্রেফতার না করায় ক্ষোভও প্রকাশ করেন তিনি।
এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আবু সাঈদ তার বুকের রক্ত দিয়ে বাংলাদেশের নতুন ইতিহাস তৈরি করেছে। তার কারণে লাখ লাখ মানুষ জেগে উঠেছে। সেই ভয়ে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়েছে। আমরা হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খিস্টান সবাই একসঙ্গে নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি।’
শেখ হাসিনা ও তার সরকারের বিচার হবে বলে জানান মির্জা ফখরুল। একইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ছাত্র-জনতার নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিচার দাবি করেন তিনি।
হাসিনা পালিয়ে গেলেও বসে নেই, ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘উনি খুব বড় গলায় বলতেন, আমি পালাব না। আমি শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে, কোনোদিন পালাই না। কিন্তু আজ লেজ গুটিয়ে পালিয়েছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম, খুন করছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। তারা পালিয়ে গেলেও তাদের প্রেতাত্মারা এখনো রয়েছে। আমরা পরিষ্কারভাবে দাবি জানিয়েছি, যেসব পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার করতে হবে। হাসিনার বিচার করতে হবে। হাসিনার মন্ত্রিসভার সদস্যদের লুটপাট ও খুনের বিচার করতে হবে। বিচার শুরু হয়েছে। আল্লাহ করে দিয়েছেন।’
এর আগে, দুপুর পৌনে ২টার দিকে গাড়িবহরে করে পীরগঞ্জের মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়া বাবনপুর গ্রামে এসে পৌঁছান মির্জা ফখরুল। এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু, রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, মহানগরের আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই দুপুর আড়াইটার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হন।