খেলা

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

জয়ের জন্য শেষ ওভারে আয়ারল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১০ রান। ৯ বলে খেলে ২০ রানে অপরাজিত থাকা আয়ারল্যান্ডের মার্ক আদায়ের তখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হুমকি। নয় নম্বরে ব্যাটিং করতে নামলেও আইরিশ পেসার আগের ওভার থেকেই যে তুলে নেন ১৪ রান।

এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটা ২-০ ব্যবধানে জিতে নিল তামিম ইকবালের দল। বৃষ্টির কারণে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচটা পরিত্যক্ত হয়েছিল। বৃষ্টিবিঘ্নিত দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ জিতেছে ৩ উইকেটে।

তবে মোস্তাফিজুর রহমান আইরিশদের পথ আটকেছেন বার বার। অফ ফর্মের কারণে প্রথম দুই ওয়ানডেতে সেরা একাদশে সুযোগ পাননি মোস্তাফিজ। আজ সুযোগ পেয়েই দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। ১০ ওভারে মাত্র ৪৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেওয়া মোস্তাফিজই আজ জয়ের নায়ক।

খানিক বাদে দুর্দান্ত খেলতে থাকা পল স্টার্লিংকে ফেরান মেহেদি হাসান মিরাজ। মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর দুর্দান্ত এক ক্যাচ হওয়ার আগে ৭৩ বল খেলে ৪টি চার ২টি ছয়ে ৬০ রান করেন স্টার্লিং। পরপর সেট দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে তখন স্বস্তি। কিন্তু এই স্বস্তি বেশিক্ষণ থাকেনি। এরপর গত ম্যাচের মতো আজও দাঁড়িয়ে যান হ্যারি টেক্টর ও লরকান টকার।

চতুর্থ উইকেটের মাত্র ৬৫ বলে ৭৯ রান তোলেন দুজন। দলীয় ২২৫ রানের মাথায় পার্ট টাইম বোলার নাজমুল হোসেন শান্তর বলে ৪৮ বলে ৪৫ রান করে আউট হন টেক্টর। ৫৩ বল খেলে ৫০ রান করা টকারকে দুর্দান্ত এক স্লোয়ারে বোল্ড করেন মোস্তাফিজুর রহমান। তারপর নিয়মিতই প্রতিপক্ষের উইকেট তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।

এর মধ্যেই শেষে দিকে মার্ক আদায়ের দাঁড়িয়ে যান। হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের বিপক্ষে শেষের হিসেবটা অবশ্য শেষ পর্যন্ত মেলাতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৬৯ রানে থেমেছে আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশের পক্ষে মোস্তাফিজ ৪৪ রানে চারটি ও হাসান মাহমুদ ৪৪ রানে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।

আগে ব্যাটিং করে ২৭৪ রান তুলেছে বাংলাদেশ। আঙ্গুলের ইনজুরির কারণে ছিটকে যাওয়া সাকিব আল হাসানের জায়গায় রনি তালুকদারকে আজ একাদশে ডাকে বাংলাদেশ। লিটন দাসকে চার নম্বরে ঠেলে একাদশে ডাক পাওয়া রনিকে ওপেনিংয়ে পাঠিয়ে দেয় বাংলাদেশ।

প্রথমবার দেশের হয়ে ওয়ানডে খেলতে নামা রনিকে একদমই স্বাচ্ছন্দ মনে হয়নি। ১৪ বলে ৪ রান করে ফিরেছেন দলীয় ১৮ রানের মাথায়। অপরপ্রান্তে তামিম ইকবালকেও স্বাচ্ছন্দে দেখা যায়নি। ওয়ানডেতে সময়টা ভালো যাচ্ছে না তামিমের। আগের নয় ইনিংসে ফিফটির দেখা পাননি। আজ ব্যাটিংয়ে দাপট দেখাতে না পারলেও তামিম অবশ্য ফিফটি পেয়েছেন।

৮২ বলে ৬টি চারের সাহায্য ৬৯ রান করে ফিরেছেন ওয়ানডে অধিনায়ক। তামিম ফেরার আগেই ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত, তৌহিদ হৃদয়, লিটন দাস। থিতু হয়েছিলেন তিনজনই। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি পাওয়া শান্ত আজও খেলছিলেন দুর্দান্ত। দারুণ খেলতে থাকা শান্ত ক্রেইগ ইয়ংয়ের দারুণ এক সুইং বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ৩২ বলে ৩৫ রান করে।

ওপেনার লিটন চারে নেমে খেলছিলেন দারুণ। ৩৯ বলে ৩৫ রান করে লিটন টপঅ্যাজ হয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়েছেন। এরপর ডকরেলের নিচু হওয়া স্পিন বলে বোল্ড হয়ে যান তৌহিদ হৃদয়। খানিক বাদে তামিম ফিরলে ১৮৬ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

সেখান থেকে মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন মুশফিকুর রহিম। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৭৫ রান তোলেন দুজন। দারুণ এক ছক্কা হাঁকানোর পর সুইপ খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়েছেন মুশফিক। ফেরার আগে ৫৪ বল খেলে ৩টি চার ১টি ছয়ে ৪৫ রান করেছেন। মুশফিক ফেরার পরপরই স্কুপ করতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়েছেন মিরাজ। স্পিনিং অলরাউন্ডার ৩৯ বল খেলে ৩টি চারের সাহায্যে করেছেন ৩৭ রান।

এই দুজন ফেরার পর অভিষিক্ত মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী, হাসান মাহমুদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও ইবাদত হোসেন চৌধুরী ফিরেছেন মাত্র ১৩ রানের ব্যবধানে। ৪৮.৫ ওভারে ২৭৪ রানে থেমেছে বাংলাদেশ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button