আমার ভিসার মেয়াদ ২০২৬ সাল পর্যন্ত আছে : শামীম ওসমান

বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য কিছু রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি বিদেশি শক্তিরাও কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান বলেন, বাংলাদেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়ার জন্য খেলা হচ্ছে। পৃথিবীর মানচিত্রে আমাদের ভৌগলিক সীমা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই বিরোধীরা আমাদের দেশের উপর নজর দিয়েছে।

তাদের একটাই টার্গেট শেখ হাসিনাকে সরানো। গত ১ বছর ধরে এই ষড়যন্ত্র বিএনপি-জামায়াত করে যাচ্ছে। আল্লাহর উপর ভরসা রেখে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, আগামী নির্বাচন তো দূরের কথা, এরপরের নির্বাচনেও বিএনপি আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তারা আগের চেয়ে ভয়াবহ ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছে। নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের বিষয়ে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।

শনিবার (৩ জুন) সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি আরকে ল্যান্ড পার্কে নেতাকর্মীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় শামীম ওসমান আরও বলেন, ২০০১ সালের পর যে অত্যাচার হয়েছে তা আমরা ভুলি নাই। ওই ৫ বছর আমাদের অনেক নেতাকর্মীর উপর অত্যাচার করা হয়েছে। অনেক নেতাকর্মীকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। মা-বোনদেরও রেহাই দেয় নি। তারা বোমা হামলার ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের উপর দোষ চাপিয়ে দিয়েছিল।

তাদের এই অত্যাচরের ফলাফল জনগণ এখন তাদের দিয়ে দিচ্ছে। যে ছেলে মায়ের খবর রাখে না সে দলের কি খবর রাখবে? আমরা কাউকে কোনো আঘাত করি না। সবাইকে মাফ করে দিয়েছি। শয়তান শয়তানি করবে। তাই আমরা তাদের ক্ষমা করে দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমি আগেই বলেছিলাম, মে জুন মাসে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা চরম খেলা শুরু হবে। দেশটাকে ধ্বংস করার খেলা হবে। ওনাদের খেলা চলবে। ওরা বাংলাদেশে কিছু ঘটনা ঘটাতে চায়। আমরা নারায়ণগঞ্জে চেষ্টা করেছি একটি স্থিতিশিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি বজায় রাখতে। কিন্তু তারা এটা রাখতে দিবে না। এই সোমবার থেকে হয়তো একটা কিছু করার চেষ্টা করবে। কিন্তু পারবে না। ঈদের পর তারা একটি ব্যর্থ বাংলাদেশ বানাতে চেষ্টা করবে।

তিনি বলেন, গত নির্বাচনে বিএনপি মাত্র ২০টা সিট পেয়েছে। এবার যদি নির্বাচনে আসে, যদিও তারা বলছে নির্বাচনে আসবে না। তারা নির্বাচন করচে চায়, মা বলে করবো; ছেলে বলে করতে দিবো না। যে ছেলে মায়ের খবর রাখে না, সে দেশের জন্য কি করবে। বিএনপির বেশ কিছু কর্মী আগামীতে ঝামেলায় পড়ে যাবে।

নারায়ণগঞ্জে বিএনপিকে আওয়ামী লীগ থেকেই কেউ কেউ টাকা দিয়ে সাহায্য করছে ইঙ্গিত করে শামীম ওসমান বলেন, হঠাৎ করে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে কিছুটা পরিবর্তন এসছে। ওই খুনিরা টাকা দিয়ে হোক যেভাবেই হোক, ১২-১৩ বছর গর্তে লুকায় ছিলো; এখন বের হয়েছে। আমাদের কেউ কেউর সাথে হয়তো ভালো সম্পর্কও আছে।

আমাদের সাচ্চা আওয়ামী লীগার দরকার। আমাদের ওই আওয়ামী লীগার দরকার নাই, যে ভালো সাজার জন্য গোপনে গোপনে বিএনপির সাথে যোগাযোগ রাখবে; কিনবা জিয়াউর রহমানের জন্মদিনে টাকা দিয়া সাহায্য করবে।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে একটি পত্রিকা রয়েছে। যে পত্রিকাটি জামায়াতের টাকায় চলে। তারা নিউজ করেছে আমার আমেরিকার ভিসা নাকি বাতিল হয়ে গেছে। আপনাদের বলতে চাই, আমার ভিসা ২০২৬ সাল পর্যন্ত আছে। তারা আবার নিউজ করেছে শামীম ওসমান তুরস্করের পাসপোর্ট নিয়ে নাকি ইউরোপ ঘুরছে।

তাদের বলতে চাই, তুরস্কের পাসপোর্ট নিয়ে ইউরোপ ঘুরা সম্ভব না। আমার ভিসার মেয়াদ ২০২৬ সাল পর্যন্ত আছে তা আমি নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দকে দেখাবো। আমার ভিসা বাতিল হয়েছে কিনা তখন তা প্রমাণ হবে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজ্বী মো. ইয়াসিন মিয়ার সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল মতিন মাস্টার, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বকর সিদ্ধিক, প্রচার সম্পাদক তাজিম বাবু, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন শাহ, যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক ও নাসিক ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, নাসিক ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা, নাসিক ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলাম, ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল, ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজি নুর উদ্দিন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপু, জেলা মহিলা শ্রমিক লীগের সভাপতি শামীম আরা লাভলী, মহানগর স্বেচ্ছা সেবকলীগের সাবেক সভাপতি জুয়েল, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দীন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল হক খোকা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটি সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. আনিসুর রহমান, আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক আব্দুস সামাদ বেপারী ও সদস্য সচিব মো. সাদ্দাম হোসেন, শ্রমিক নেতা আশরাফ উদ্দিন, সাবেক কাউন্সিলর আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জ কলেজের ভিপি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার রহমান বাপ্পি, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক ভূইয়া রাজু, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হাজ্বী জহিরুল হক জহির ও যুবলীগ নেতা হুমায়ুন কবির প্রমুখ।