১০ দলের সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের দুই গ্রুপের হট্টগোল

গণঅধিকার পরিষদের দুপক্ষের আমন্ত্রণ কেন্দ্র করে ১০ দলের সংবাদ সম্মেলনে হট্টগোল ও উত্তেজনার ঘটনা ঘটেছে। ড. রেজা কিবরিয়ার নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদকে সংবাদ সম্মেলনে ডাকায় আপত্তি জানান নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। এসব বিষয়ে পালটাপালটি জবাবে পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ১০ রাজনৈতিক দলের যৌথ উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি শান্ত হলে আবারও সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, সংবাদ সম্মেলনে প্রথমে আসেন ড. রেজা কিবরিয়ার নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান। এর পর আসেন নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা।

এ সময় এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জুকে উদ্দেশ্য করে ফারুক হাসান বলেন, ভাই গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া বিদেশে থাকায় উনার পক্ষ থেকে দলের প্রতিনিধি হিসেবে আমি এখানে এসেছি।

জবাবে নুর বলেন, মঞ্জু ভাই- আপনারা তাদের যদি ডেকে থাকেন তা হলে আমরা এখান থেকে চলে যাই। আর নুরের কর্মীরা বলেন, নুরুল হক নুর আমাদের নির্বাচিত সভাপতি। সুতরাং আমাদের নিয়ে আপনারা খেলতে পারেন না।

এর জবাবে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, গতকাল রাতে এই প্রশ্ন উঠেছিল যে, দুটি (গণঅধিকার পরিষদ) পক্ষ। কাকে সমন্বয়ক করব। তখন মান্না ভাই বলেছেন— এটি আমাদের বিষয় না। আর এখানে দুটি বিষয় হতে পারে, একটি হচ্ছে— গণঅধিকার পরিষদকে বাদ দিয়ে হতে পারে।

আরেকটি হচ্ছে— বিএনপি দুটি পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছে। সুতরাং আমরাও দুটি পক্ষকেই দাওয়াত দেব।

সংবাদ সম্মেলনে নুরুল হক নুর বলেন, মঞ্জু ভাই বলেছেন— বিএনপি দুই অংশের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আমরা বিএনপিকে জানিয়েছি যে, নির্বাচন কমিশনের প্রতিবেদন এবং কিছু দুষ্কৃতকারী গোয়েন্দা সংস্থার লোক, যারা নির্বাচনের আগে দল ভাঙে, দল নিয়ে ষড়যন্ত্র করে তাদেরকে যদি আমাদের রাজনৈতিক বন্ধুরা সমর্থন করে তা হলে মূলধারার দলের প্রতি সেটা অন্যায় ও অবিচার হয়।

আশা করি, আমাদের কোনো বন্ধু এটা করবে না। বিএনপিকেও আমরা পরিষ্কার করে বলেছি— যারা দুর্বৃত্ত ও দুষ্কৃতকারীদের সমর্থন করবেন, প্রয়োজনে আমরা তাদের সঙ্গে যাব না।

স্লোগানের মধ্যেও ফারুক হাসান বক্তব্যে বলেন, ড. রেজা কিবরিয়া অসুস্থতাজনিত কারণে দেশের বাইরে রয়েছেন। তার পক্ষ থেকে আমি আজকের সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যে রাখছি। আপনারা সবাই জানেন, গণঅধিকার পরিষদের নিবন্ধন পাওয়ার জন্য আমাদের আহ্বায়কের স্বাক্ষরে দলিল জমা দিয়েছিলাম। সেটি নির্বাচন কমিশন যাচাই করে চূড়ান্ত তালিকায় যে ১২ দল ছিল, তার মধ্যে গণঅধিকার পরিষদ অন্যতম দল ছিল।

পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে আবারও সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। ‘ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রেসক্রিপশনে রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে পরিচিত ও স্বীকৃত ক্রিয়াশীল দলগুলোকে বাদ দিয়ে অখ্যাত, অপরিচিত ভুঁইফোড় দুটি দলকে নিবন্ধন প্রদানের প্রতিবাদে’ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, লেবার পার্টি, বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি (বিএইচপি), ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি), বাংলাদেশ পিপলস পার্টি (বিপিপি), বাংলাদেশ সনাতন পার্টি ও বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএলডিপি)।

সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর, গণঅধিকার পরিষদের (ড. রেজা কিবরিয়া) যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএলডিপির চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, বিপিপি চেয়ারম্যান বাবুল সর্দার চাখারী, ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি আশিক বিল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button