সোনারগাঁয়ের চর কিশোরগঞ্জে অস্ত্রের ঝনঝনানি, সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মী স্থানীয়রা

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের চর কিশোরগঞ্জ এলাকায় তিন নৌ-ডাকাতের হাতে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রের কারণে আতংকের মধ্যে দিন যাপন করছে উক্ত ইউনিয়নের জনগণ।

চর কিশোরগঞ্জ এর জনপদ সুজলা সুফলা শস্য শ্যামল নদী বেষ্টিত চর ভূখণ্ড নয়নাভিরাম নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে ভয়ংকর এক সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর। যারা ডাকাতি, চাঁদাবাজি,অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা,ধর্ষণ এর মতো কাজগুলো করে যাচ্ছে প্রকাশ্য দিবালোকে। নিরব এই চরাঞ্চালকে করেছে অস্থিতিশীল। যাদের কাছে আজ নিরবে জিম্মি হয়ে আছে এই চরে বসবাসকারী সহজ সরল নিরীহ মানুষগুলো। অস্ত্র হাতে ছবি দেখলে মনে হবে তারা যেন বান্দরবনের আঞ্চলিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ সদস্য আর এদের শেল্টারদাতা হিসেবে গুঞ্জন উঠেছে ৯ নং ওয়ার্ড মেম্বার দিল মোহাম্মদ ও কাশেম দালাল নামের দুই ব্যক্তির। ছবিটি গাজী সাগরের টিনের ঘরে উঠানো বলে জানা গেছে।

গোপনে পাওয়া ছবিতে দেখা যায়,উপজেলার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের চর কিশোরগঞ্জ গ্রামের আঃ মজিদের ছেলে ও দিল মোহাম্মদ মেম্বারের ভাতিজা রিফাত (২২),কবির হোসেনের ছেলে ও কাশেম দালালের বাগিনা গাজী সাগর (২০), মোস্তফার ছেলে তুহিন’র (২৩) হাতে তিনটি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। অনুসন্ধানে জানা যায়, বয়সে কম হলেও কিশোর গ্যাংয়ে আধিপত্য বিস্তার, নৌ-ডাকাতি ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তির ছত্রছায়ায় গড়ে তুলেছে বিশাল সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী  বাহিনী। এদের কাজই হচ্ছে আতংকের মাধ্যমে নিজেদের অস্ত্র ব্যবসার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের মাদক ব্যবসা ও নৌ-ডাকাতি করা। আর এই কিশোর গ্যাংয়ের অর্থ যোগানদাতা হিসেবে কাজ করছে চর হোগলা গ্রামের মোতালেব মেম্বার’র ছেলে সাহাদাত। গ্রুপের অন্যান্য সক্রিয় সদস্যরা হচ্ছে চর কিশোরগঞ্জ এলাকার মৃত মুজিবুর রহমানের ছেলে মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী নৌ-ডাকাত জামান, মৃত শাহজালালের ছেলে অস্ত্র ব্যবসায়ী ফারুক, এর আগেও ফারুকের বিরুদ্ধে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ৫৪/১৭ ধারায় মামলা হয়েছিলো, সেই মামলায় গ্রেফতারও হয়েছিল সে। আরো আছে হাকিম আলীর ছেলে মাদক ব্যবসায়ী বাবু, মৃত পরব আলীর ছেলে নাসির।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, এই বাহিনীর কাছে দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্রের পাশাপাশি অত্যাধুনিক সব অবৈধ আগ্নেঅস্ত্র রয়েছে। আধিপত্য বিস্তার, মেঘনা নদীতে নৌ ডাকাতির পাশাপাশি মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা এবং এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে চাঁদাবাজি ও রাজনৈতিক নেতাদের সুনজরে থাকতেই ব্যবহার করা হয় এসব অস্ত্র। আর এতে স্থানীয়দের মাঝে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা। তারা বলছেন এদেরকে এখোনি থামানো না গেলে যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে অনাকাংখিত ঘটনা এমন কি খুন পর্যন্ত। বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে সন্ত্রাসীদের অনেকেই অস্ত্রসহ ধরা পড়লেও তাদের গডফাদাররা রয়ে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই নতুন সদস্য সংগ্রহের মাধ্যমে আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠে সংঘবদ্ধ এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button