রূপগঞ্জে ফসলি জমি ভরাট করে আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলার অভিযোগ

রূপগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাগবের, কেয়ারিয়া ও গুতিয়াবো মৌজার ৩ শতাধিক বিঘা কৃষকের জমির মধ্যে শতাধিক বিঘা জমি না কিনেই ফরটিস নামক আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় প্রভাবশালী ও সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় দিন দিন কৃষকদের তিন ফসলি জমি তারা দখলে নিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের প্রভাব দেখিয়ে, গ্রেফতারের ভয়ভীতি ও মামলার হুমকি দিয়ে  জমির মালিকদের জিম্মি করা হচ্ছে।

আবাসন প্রকল্পের অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। রূপগঞ্জ থানা পুলিশ রহস্যজনকভাবে এ অবৈধ আবাসন প্রকল্প পক্ষ নিয়ে বর্তমান সরকার ও পুলিশের ভাব মুর্তি ক্ষুন্ন করছে।
পুলিশ ও আবাসন প্রকল্পের নিয়োজিত সন্ত্রাসীদের হুমকিতে কৃষকদের কেউ মুখ খুলে প্রতিবাদ করা সাহস পাচ্ছে না। প্রতিবাদ করলেই ভয়ভীতি হামলা ও মামলা দেয়া হচ্ছে। থানা পুলিশের সহযোগিতা চেয়েও কৃষকরা পুলিশের কাছে সন্তোষজনক প্রতিকার পাচ্ছেনা বলেও অভিযোগ রয়েছে।
বাগবের এলাকার জমির মালিক  এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান শুক্কুর মাহমুদ বলেন,  ফরটিস গ্রুপ ৮/১০ বছর ধরে আমাদের বাগবের মৌজায় ২১৯, ২২০, ২২১, ২২২, ২২৪, ২০৮, ২০৯, ১৮৫ নং আরএস দাগে সাড়ে চার বিঘা জমিতে বালু ভরাট করে আমাদের জমি দখল করে রাখছে।
তারা জোরপূর্বক জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে আমাদের তিন ফসলি জমি জবরদখল করার পায়তারা করছে। আমাদের জমিতে নির্মাণ করা ঘর ভেঙ্গে ও আগুনে জ¦ালিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়া হচ্ছে।
তারা পুলিশ দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। ফরটিস আবাসন প্রকল্পের অবৈধকর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। 
বাগবের গ্রামের কৃষক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ফরটিস আবাসন প্রকল্পের অবৈধকর্মকান্ডের জন্য আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারিনা। আমাদের রাস্তা ঘাট সব সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে বন্ধ করে দিয়েছে এই কোম্পানি।

আমাদের বাড়ির চারপাশ বালু দিয়ে ভরাট করে ফেলেছে।  কোম্পানির ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা আমাদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমরা এর একটা সঠিক বিচার চাই।

বাগবেরের কৃষক রফিক উদ্দিন বলেন, ১০-১২ বছর পূর্বে এই ফরটিস কোম্পানি আমাদের এলাকার কৃষি জমি ক্রয় করা শুরু করে। জমির পুরো টাকা না দিয়ে তারা জমিতে বালু ভরাট করে দখল করে নিয়ে গেছে। অনেকের জমি না কিনেও বালু ভরাট করে দখলে নিয়ে যাচ্ছে।

বাগবের গ্রামের মৌন্তাছির রহমান রমজান আলী বলেন, সিএস, এসএ ও আরএস পর্চায় বাব-দাদার রেকর্ডীয় নাম থাকা স্বত্বেও তিন ফসলি আমাদের চার বিঘা কৃষি জমি ফরটিস আবাসন প্রকল্প বালু ভরাট করে জোরপুর্বক দখল করার চেষ্টা করছে। আমি এ অবৈধ জবরদখলের প্রতিকার চাই।

শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীর বলেন, আমাদের জমি জোরপূর্বক দখল করে নিচ্ছে এ ফরটিস কোম্পানি। আমি এতে বাধা দিলে এ কোম্পানি বিনা অপরাধে আমার নামে মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করেছেন।

ফরটিস আবাসন প্রকল্পের ম্যানেজার বলেন, আমাদের ক্রয়কৃত জমিতে বালু ভরাটের সময় আশপাশের কিছু জমিতে বালু চলে গেছে। আমরা কৃষকদের জমি থেকে বালু সরিয়ে নিবো। 
রূপগঞ্জ থানার ওসি এ এফ এম সায়েদ বলেন, অবৈধ দখলদারেরা যতই প্রভাবশালীই হোক ছাড় দেওয়া হবেনা।

রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও রূপগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ মশিউর রহমান তারেক বলেন, সামনে সংসদ নির্বাচন ।

আগামী নির্বাচনে বর্তমান সরকারের ভাব-মুর্তি ক্ষুন্ন করতেই পুলিশের ও আবাসন প্রকল্পের একটি চক্র জমি না কিনেই কৃষকদের জমি জবরদখল করে ভরাট করছে।

কোনো ক্রমেই আবাসন প্রকল্পের অবৈধ কর্মকান্ড করতে দেওয়া হবে না। প্রশাসনের সহযোগীতায় কৃষকদের জমি তাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button