রূপগঞ্জে মহাসড়কে ময়লার ভাগাড়, পরিবেশ বিপর্যয়ে জনদুর্ভোগ চরমে

রূপগঞ্জের ভূলতা গাউছিয়ায় মহাসড়কের উপর ময়লার ভাগাড়ে বিপর্যয় হচ্ছে পরিবেশ। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে মহাসড়কে ময়লার ভাগাড় পরিস্কার করতে কেউ দায়িত্ব নেয়া হচ্ছে না বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন।

সরেজমিনে দেখা যায় রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল গাউছিয়া মাছের আড়ত এলাকায় গাজীপুর চট্টগ্রাম এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের উপরে ময়লার বিশাল ময়লার ভাগাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ আবর্জনার পঁচা দুর্গন্ধে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত মহাসড়কের এ স্থান দিয়ে চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বাসযাত্রী, স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী এবং পথচারীদের।

এতে বাতাসে নানা ধরনের রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়ায় রোগাক্রান্ত হচ্ছেন স্থানীয় পথচারীরা। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ধীরে ধীরে তা ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়। পথ চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায় মহাসড়কের এ স্থানে প্রায়শই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এছাড়া খোলা জায়গায় স্তূপ করা এসব ময়লা আবর্জনার উৎকট গন্ধে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, তেমনি চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন পথচারীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় ভুলতা গাউছিয়া এলাকায় কাঁচামালের আড়ৎ মহাসড়কের উপর কাঁচাবাজার, হোটেল রেস্তোরা সহ গাউছিয়া এলাকার সকল ময়লা আবর্জনা এমন কি বাড়িঘরের আবর্জনা মহাসড়কের দুই লেন দখল করে লেনের উপরেই ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা। আর এই বর্জ্যে সৃষ্টি হচ্ছে ময়লার ভাগাড়।

এই ময়লার দুর্গন্ধে রাস্তায় চলাচলকারী লোকজনকে নাকে রুমাল বা কাপড় চেপে চলাচল করতে হচ্ছে। এখানে রয়েছে বাংলাদেশের আলোচিত ভুলতা গাউছিয়া কাপড়ের মার্কেট। সারাদেশের হাজার হাজার ব্যবসায়ী প্রতি সোমবার ও মঙ্গলবার এ কাপড়ের হাটে আসেন। তারা সকলেই পড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। এখানে রয়েছে ডজনখানেক হাসপাতাল, স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসা। রয়েছে রোগীসহ শত শত শিক্ষার্থী।

স্থানীয় কাঞ্চন এলাকার ওবায়দুর রহমান খোকন বলেন, হাইওয়ে সড়কের উপর ময়লার ভাগাড় দীর্ঘদিন ধরে আছে। প্রতি দিনই ঢাকা সিলেট মহাসড়কের ফুটপাতের ময়লা, এখানকার হোটেল রেস্তোরা, হাসপাতালের জমানো ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে এখানে।

গত কয়েক মাস ধরে ভুলতা উড়াল সেতুর নিচে সড়কের গোলাকান্দাইলে এলাকায় সড়কের ওপর ইচ্ছে মতো ফেলা হচ্ছে পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল, কর্কশিট, কার্টন, কাগজ, পলিথিন, বস্তা, মেডিক্যাল বর্জ্য, বাসা-বাড়িসহ হোটেল রেস্তোঁরার আবর্জনা। ফেলে যাওয়া বর্জ্য এখন সড়কে বেশিরভাগ জায়গা দখল করে আছে। এর ফলে সৃষ্টি হয়েছে বিশাল ভাগাড়। দিন দিন এর পরিধি বাড়ছে। এই ময়লা থেকে ছড়াচ্ছে বিভিন্ন রোগ বালাই। বৃষ্টি হলে সড়কগুলোতে ময়লা ভেসে উঠে এলাকায় একাকার হয়ে যায়।

এসকল ময়লা আবর্জনা পরিস্কারের স্থায়ী ব্যবস্থা না থাকায় কয়েক দিন পর পর এখানে ময়লা আবর্জনায় সৃষ্টি হচ্ছে ময়লার ভাগাড়। স্কুল পড়ুয়া দশম শ্রেনীর ছাত্র জাহিদ হাসান বলেন, এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন গোলাকান্দাইল স্কুলে যাই। ময়লার দুর্গন্ধ অনেক খারাপ লাগে। এখানে এসেই নাক মুখ চেপে ধরে রাস্তা পার হই। আমরা দেখেছি সাংবাদিকেরা জন দুর্ভোগ নিয়ে লেখেন কিন্তু স্থায়ীভাবে কোন সমাধান হয় নাই। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরও দেখা মিলেনি কর্তৃপক্ষের কোন পদক্ষেপ। যেনো নিশ্চুপ দেখার মতন কেউ নেই।

গোলাকান্দাইল এলাকার বাসিন্দা নাঈম আহমেদ বলেন, শুনেছি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার দেয়া বিধি-নিষেধ দেয়া সত্ত্বেও এখানে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। রাস্তা দিয়ে দুর্গন্ধের কারণে সকলের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। লোকালয় থেকে দূরে কোথাও এই ময়লা পরিবেশসম্মত উপায়ে সংরক্ষণ করা উচিত। সম্ভব হলে এগুলোকে রিসাইকেল করে জৈব শক্তিতে রূপান্তর করা যেতে পারে।

কয়েকজন পথচারী জানান মহাসড়কের পাশে স্তুপ করা এসব ময়লা আবর্জনার উৎকট গন্ধ আশপাশের এক কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। এতে এলাকার লোকজনের পাশপাশি বাসযাত্রী ও পথচারীকে প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ স্থান দিয়ে চলাচলে ময়লার পঁচা গন্ধে বমি চলে আসে।

বাতাসে ভেসে আসা ময়লার দুর্গন্ধে প্রতিনিয়ত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে স্থানীয় লোকজন। মহাসড়কের ওই স্থানে বাজারের ময়লা, আবর্জনা ফেলে পরিবেশ দূষিত করছে। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button