নারায়ণগঞ্জে সম্ভাব্য ট্রেন দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল অর্ধ-শতাধিক যাত্রী

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের প্রাণকেন্দ্র বলে খ্যাত ২নং রেলগেট এলাকায় ট্রেনের হুইসেল বাজছে। লেভেল ক্রসিংয়ের দায়িত্বে থাকা গেটম্যান তখনও দু’দিকের ক্রসিংবার নামাতে ব্যর্থ। এরই মধ্যে রেলক্রসিংয়ে আটকা পরেছিল অটোরিকশা, সিএনজি ও প্রাইভেটকারসহ প্রায় ১৬টি যানবাহন। যেখানে যাত্রী ছিলো প্রায় অর্ধশতাধিক। ট্রেনের হুইসেলের শব্দে তখন চারিদিকে শুধুই আতঙ্ক। এমন পরিস্থিতিতে যাত্রীদের বাঁচাতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী ও ট্রাফিক পুলিশ। তারা দ্রুত যানবাহনগুলো রেলক্রসিং থেকে সরিয়ে দিতে থাকেন। অবশেষে তাদের চেষ্টায় ভয়াবহ ট্রেন দূর্ঘটনা থেকে প্রাণে বাঁচে অর্ধশতাধিক যাত্রী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২নং রেলগেট এলাকার এ রেলক্রসিংয়ে ৪ জন গেটম্যান থাকার কথা থাকলেও মাত্র ২ জন গেটম্যানই তা নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে তাদের পক্ষে যথাসময়ে দু’দিকের ক্রসিংবার নামানো সম্ভব হয়নি। তাই রেলক্রসিংয়ের দু’পাশে আটক পরে প্রায় অর্ধশতাধিক যানবাহন। এসময় কোন কোন যাত্রী প্রাণ বাঁচাতে যানবাহন থেকে নামতে গিয়ে আহত হন। 

এ বিষয়ে ২নং রেলগেট ট্রাফিক পুলিশ বক্সের টিআই নাজমুল জানান, চাষাঢ়ায় রাস্তার সংস্কার কাজ হওয়ায় শহরের যানবাহনের আউটগোয়িংয়ে একটু সমস্যা হচ্ছে। তবুও আমরা যানজট নিরসনে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু গত কয়েকদিন যাবত দেখা যাচ্ছে, এখানে লেভেল ক্রসিংয়ের দায়িত্বে থাকা গেটম্যানরা তাদের ক্রসিংবার যথাসময়ে নামাতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে প্রায় সময়ই বহু যানবাহন রেলক্রসিংয়ে আটকা পরে। আজও তাই হয়েছিলো। আল্লাহ্’র অশেষ রহমতে আমরা যানবাহনগুলো সরিয়ে দিতে পেরেছি। তবে এখনও আমরা আশঙ্কা মুক্ত হতে পারছিনা। কেননা, গেটম্যানরা যদি বার বার এভাবে ক্রসিংবার নামাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে যে কোন সময় বড় ধরনের একটা দূর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কার রয়েছে। তাই নারায়ণগঞ্জ স্টেশন মাস্টারের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে, তিনি যে এ বিষয়ে আরও সর্তক হন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২নং রেলগেট এলাকার এ রেলক্রসিংয়ে ৪ জনের জায়গায় ২ জন আবার কখনো কখনো একজন গেটম্যানই দায়িত্ব পালন করেন। ফলে প্রায়ই এ রেলক্রসিংয়ে যানবাহন আটকা পরে। এতে প্রাণ ঝুঁকিতে পরে বহু সাধারণ যাত্রী। এছাড়াও এ রেলক্রসিংয়ের পাশেই অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে একটি অটোরিকশা, সিএনজি ও প্রাইভেট কার স্ট্যান্ড। কোন এক অদৃশ্য শক্তির বলে এ স্ট্যান্ডটি বহাল রয়েছে। রেললাইন থেকে শুরু করে সড়কের প্রায় এক তৃতীয়াংশ জায়গা দখল করে রেখেছে এ স্ট্যান্ডটি। ফলে এখানে প্রতিদিনই ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়।

অটোরিকশা ও সিএনজি চালকদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, কিছু অসাধু ট্রাফিক পুলিশ ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কর্মীদেরকে (ট্রাফিক কাজ নিয়োজিত) নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে এ স্ট্যান্ড চালানো হচ্ছে। তবে এ পিছনেও রয়েছে একটি অদৃশ্য শক্তি। যারা অনেকটা ধরাছোয়ার বাইরে থেকে স্ট্যান্ডটি নিয়ন্ত্রণ করছে বলেও জানান তারা।

 

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশন মাস্টার কামরুল ইসলাম বলেন, গেটম্যানরা যতক্ষনা না বলবে রেললাইন ক্লিয়ার, ততক্ষন পর্যন্ত স্টেশন মাস্টার রেলগাড়ী ছাড়ার অনুমতি দেয় না। যতক্ষন রেড সিগন্যাল থাকবে, ততক্ষন রেলগাড়ী অপেক্ষা করবে। গেটম্যান ২ জন থাকার প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমরা ২নং রেলগেট এলাকায় ৫ জন গেটম্যান পাঠাইছি। তারা সবাই ছিলো। তবে বাস্তবতার সাথে এ বক্তব্যের কোন মিল খোঁজে পায়নি প্রতিবেদক।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button