রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতা বিষয়ক জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত

 

রাকিবুল ইসলাম ইফতি, বার্তা সম্পাদকঃ

দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-এর উদ্যোগে এবং সুজন-এর সহযোগিতায় রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতা বিষয়ক জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার প্রত্যাশায় রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতার লক্ষ্যে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-এর উদ্যোগে এবং নাগরিক সংগঠন সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক-এর সহযোগিতায় এক জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংলাপটি ৯ অক্টোবর ২০২৩; সোমবার, সকাল ১০ টায় সিরডাপ মিলনায়তন (২য় তলা), তোপখানা রোড, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়।

সংলাপে সারাদেশে অনুষ্ঠিত আটটি বিভাগীয় কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীগণের নিকট থেকে প্রাপ্ত মতামত ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়।

জাতীয় সংলাপে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি, বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও সিপিডি’র সম্মানিত ফেলো ড. রওনক জাহান, সুজন-এর নির্বাহী সদস্য বিচারপতি এম এ মতিন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও সুজন-এর নির্বাহী সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সুজন-এর নির্বাহী সদস্য আলী ইমাম মজুমদার, সুজন-এর নির্বাহী সদস্য ড. রোবায়েত ফেরদৌস, বিশিষ্ট ব্যাংকার নুরুল আমিন প্রমুখ। রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জনাব নাহিম রাজ্জাক এমপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হারুন অর রশিদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক জনাব রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর।

এছাড়াও সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিত্বকারী নাগরিকগণ অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন।

সংলাপে সঞ্চালনা করেন দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-এর গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কান্ট্রি ডিরেক্টর ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।

এছাড়া আটটি বিভাগের আটজন সুজন প্রতিনিধি এতে বক্তব্য রাখেন। তাঁরা হলেন, রংপুর বিভাগ থেকে ড. শফিকুল ইসলাম কানু, রাজশাহী থেকে শফিউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা থেকে জুবায়েরুল হক ভুঁইয়া নাহিদ, চট্টগ্রাম থেকে শাহাদাত হোসেন, সিলেট থেকে ফজলুল করিম সাইদ, বরিশাল থেকে রণজিৎ কুমার দত্ত, ময়মনসিংহ থেকে ইয়াজদানি কুরাইশি কাজল এবং খুলনাৃ থেকে অ্যাডভোকেট এ বি এম সেলিম।

স্বাগত বক্তব্যে ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, স্বাধীনতার পর ৫২ বছর পেরিয়ে গেছে। এই সময়ের মধ্যেও আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক ও নির্বাচনী ব্যবস্থাকে কার্যকর করতে পারিনি। আমরা আশা করি, আমাদের রাজনীতিবিদরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। তিনি বলেন, আমরা সুজন-এর পক্ষ থেকে একটি নাগরিক সনদ প্রণয়ন করেছি এবং ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতার লক্ষ্যে আটটি বিভাগীয় শহরে বিভাগীয় কর্মশালা করেছি। এর মাধ্যমে আমরা সমাজের সচেতন মহলের মতামত নেওয়ার চেষ্টা করেছি। এসব সংলাপে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় সবাই সংকট উত্তরণে সংলাপের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তাদের মতে, সংলাপের বিকল্প হলো সংলাপ। নাগরিকদের মতো আমরাও মনে করি, আলোচনার টেবিলে বসেই সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার। আমরা কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি না। তবে আমাদের প্রস্তাবগুলো সম্ভাব্য আলোচনার এজেন্ডা হতে পারে।

ড. রওনক জাহান বলেন, বড় দুটো দলের মধ্যে যে সংলাপ হতে হবে সে বিষয়ে কোনো বিতর্ক নেই। সংলাপের ব্যাপারে ঐকমত্য নেই। কিন্তু শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি, নিজ সংসদীয় এলাকার উন্নয়নের জন্য আর্থিক বরাদ্দ পাওয়া এবং নিজেদের সুযোগ-সুবিধার ব্যাপারে ঐকমত্য আছে বড় দুই দলের মধ্যে। সংসদ সদস্যদের আচরণবিধি প্রণয়নের ব্যাপারে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য নেই। কিন্তু ক্ষমতায় গেলে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার ব্যাপারে অনঢ় অবস্থান লক্ষ্য করা হয়। আমি মনে করি, বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকটে নিরসনের জন্য রাজনৈতিক ও আইনি সংস্কার দরকার। কিন্তু শুধু আইনি সংস্কার করেই সমস্যার সমাধান হবে না। একইসঙ্গে দরকার রাজনৈতিক সংস্কারের ইতিবাচক উন্নয়ন। নির্বাচনে পরাজিত দলের নেতা-কর্মীদের জীবন-জীবিকা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য থাকা দরকার।

নাহিম রাজ্জাক এমপি বলেন, বিভিন্ন পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি তোলা হলেও কোন প্রক্রিয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে তা কেউ বলতে পারছে না। এর দায় শুধু সরকারি দল ও ক্ষমতাসীন জোটের ওপর চাপিয়ে দিলে হবে না। অতীতে নানাভাবে রাজনীতিবিদদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে, ২০১৩-১৪ সালে জ্বালাও-পোড়াও চালানো হয়েছে। আমি মনে করি, নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে একটি ঐকমত্য তৈরি হওয়া দরকার। কিন্তু নৈরাজ্য সৃষ্টি করা ঠিক হবে না। রাজনৈতিক ঐকমত্য সৃষ্টি করতে হলে দায় নিতে হবে। আমি মনে করি, রাজনীতিতে ব্যবসায়ীদের প্রবেশ নিয়ে কথা না বলে নৈতিকতা নিয়ে রাজনীতি করা দরকারের বিষয়ে কথা বলা দরকার। আমি মনে করি, দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতা হওয়া দরকার। তা হলে তা হবে একটি মাইলফলক। নিজেদের সমস্যা নিজেদেরই সমাধান করতে হবে। সংলাপ হলে পার¯পরিক আস্থা রাখতে হবে, ছাড় দেওয়ার মানসিকতা বজায় রাখতে হবে।

সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হারুন অর রশিদ বলেন, রাজনৈতিক সমঝোতার লক্ষ্যে সংলাপের কোনো বিকল্প নেই। যারা সংলাপে বসতে রাজি নন, তারা মূলত সংকট এড়িয়ে যেতে চান। আমরা মনে করি, রাজনৈতিক সংকটের একটি স্থায়ী সমাধান হওয়া দরকার। এজন্য কতগুলো রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংস্কার দরকার। তিনি বলেন, এখনকার সংকট তৈরি হয়েছে তত্ত¡াবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের মধ্য দিয়ে। এই পদ্ধতির সংস্কার না করে সরকার একতরফাভাবে তা বাতিল করা হয়েছে। অথচ সংসদীয় কমিটির সভায় মহাজোটের সকল নেতা এই পদ্ধতি বহাল রাখার কথা বলে গেছেন। সরকার তার নিজের স্বার্থে আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা করছে। এই প্রবণতাও বন্ধ হওয়া দরকার।

জোনায়েদ সাকী বলেন, বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ চাইলেও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারবে না। কারণ এখানে আরও অনেক স্টেকহোল্ডারের স্বার্থ রয়েছে। আমাদের রিজার্ভ কমছে, রেমিটেন্স করছে, খেলাপিঋণের পরিমাণ বাড়ছে। ২০০৯ সালে খেলাপি ঋণ ছিল ২৪ হাজার কোটি টাকা, এখন তা ৪ লাখ কোটি টাকা। এখানে দলীয় লোকেরাই সুবিধা পাচ্ছে। এখানে ফায়দাতন্ত্রের রাজনীতি তৈরি হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী নিজে চাইলেও এই ধারা ভাঙতে পারবেন না। তিনি বলেন, সব দলই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চায়। তাই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা কীভাবে হতে পারে তা ঠিক করা দরকার এবং একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত হওয়া দরকার, যার একটি আইনি ভিত্তি থাকবে। একটি নূন্যতম নির্বাচনী ব্যবস্থা থাকা এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সরকারি কর্মকমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা দরকার।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমার ওপর আস্থা রাখুন, নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সে প্রতিশ্র“তি রক্ষা করেননি। আমি মনে করি, এখন আর সংলাপের পরিবেশ নেই। তাছাড়া সংলাপের লক্ষণও নেই। দেশের রিজার্ভ কমে ১৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলছেন, রিজার্ভ কোনো সমস্যা নয়। তাই সংলাপ করে লাভ কী? মানুষের মধ্যে ভয়ের সংস্কৃতি বিরাজ করছে। সরকারি দল আস্থা ও বিশ্বাসের পরিবেশ নষ্ট করছে। বিগত ১৫ বছর ধরে এ অবস্থা চলছে। তারপরও সংলাপ যদি হতে হয়, তাহলে সুনির্দিষ্ট কিছু এজেন্ডা নির্ধারণ করতে হবে, যাতে আমরা ভবিষ্যতে সংকট এড়াতে পারি।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, বাংলাদেশ আজ দ্বি-দলীয় বৃত্তের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে, দেশে সা¤প্রদায়িকতা বাড়ছে, নির্বাচনী ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গেছে। তাই গণতন্ত্র ও নির্বাচনী ব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও কার্যকর করার জন্য এ ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কার নেই। নির্বাচনে টাকার খেলা বন্ধ করতে হবে, আনুপাতিক নির্বাচনী পদ্ধতি চালু করতে হবে। এরজন্য জনগণের শক্তির ওপর নির্ভর করতে হবে এবং মুক্তিযুদ্ধের ধারার আলোকেই রাজনীতি করতে হবে।

বালাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, আমরা এখন সেল্ফ সেন্সরশিপের মধ্যে বসবাস করছি। আমাদের মনে সবসময় একথা বিরাজ করে, কথা বললে বিপদ হবে না তো। আমরা মনে করি, সংলাপেই সমাধান হওয়া দরকার। কিন্তু সংলাপের পূর্ব শর্ত হলো নিজ আদায় করা, আর কিছু ছাড় দেওয়া। না হয় সংলাপ অতীতের মতো ব্যর্থ হবে। তিনি বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, নির্দলীয় সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সহায়ক নির্বাচনকালীন সরকার ছাড়া নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে না। বর্তমানে রাজনীতি, শিক্ষা সর্বক্ষেত্রে টাকার খেলা চলছে। এটাও বন্ধ হওয়া দরকার। নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে পরিশুদ্ধ করার জন্য সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনী পদ্ধতি চালু করা দরকার।

বিচারপতি এম এ মতিন বলেন, নব্বয়ে প্রণীত তিনজোটের রূপরেখায় বলা হয়েছিল, আমরা ভবিষ্যতের সমস্যা সমাধানে আলাপ-আলোচনা করেই সমাধান করবো। কিন্তু আমাদের সম্মানিত রাজনীতিবিদরা সেই প্রতিশ্র“তির কথা ভুলে গেছেন। বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা এবং ধর্ম থেকে আমরা দেখতে পাই সংলাপের মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হয়েছে। তাই সম্ভাব্য সংঘাত এড়াতে সংলাপের কোনো বিকল্প নেই বলে আমরা মনে করি।

আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ব্রিটিশ আমলে সীমিত পরিসরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতো। সেখানে ব্যালট ছিনতাই বা কেন্দ্র দখলের কোনো সংবাদ আমরা শুনিনি। পাকিস্তান আমলে ১৯৭০ সালে সামরিক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনও সুষ্ঠু হয়েছিল। ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে বলা হয়েছে, জনগণই হবে রাষ্ট্রের মালিক, অর্থাৎ বাংলাদেশ হবে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। আর গণতন্ত্রে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা থাকলেও কমিশন তা প্রয়োগ করছে না। গাইবান্ধা-৫ নির্বাচনের পর কমিশন যে সুপারিশ দিয়েছিল তা মানা হয়নি। কমিশন চাইলে দোষী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারতো। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ও সদিচ্ছা থাকা দরকার। আমি মনে করি, বৃহত্তর সমঝোতার লক্ষ্যে সংলাপের বিকল্প নেই।

ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই জাতি হিসেবে আমরা সংকটের মধ্য দিয়ে পার করছি। ১৯৭৪ সালে তৈরি হওয়া সাংবিধানিক সংকট ১৯৯১ সালে সমাধান হয়েছে। আবার ২০০৬ সালে এসে আমরা নতুন সংকটে পড়ে গেলাম। ২০১৪ সালে আবার সংকট তৈরি হয়, যার শুরু হয়েছে ২০১১ সালে প দশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে। সংবিধান থাকলেও সাংবিধানিকতা নেই, প্রাতিষ্ঠানিকতা নেই। আমাদের সংশোধনীগুলো জনগণের কল্যাণে নয়, বরং ক্ষমতাসীনদের স্বার্থে আনা হয়েছে। কিন্তু আমরা আশাবাদী হতে চাই। আমরা মনে করি, পরিবর্তন দরকার, পরিবর্তন হতেই হবে।

অধ্যাপক ড. রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ৫টি ভিন্ন নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং সংঘাতের আশঙ্কা শোনা যাচ্ছে। আমরা মনে করি, সংঘাতের এড়াতে সংলাপের কোনো বিকল্প নেই। শত্রু’র সঙ্গেও সংলাপ হতে পারে। আমি মনে করি, আমাদের জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে পড়েছে। তাই যে কোনো উপায়ে একটি নির্বাচন করলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে না। আমাদের জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে হবে এবং একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত গড়ে তুলতে হবে।

সংলাপে আটটি বিভাগীয় সংলাপে উঠে আসা রাজনৈতিক সংস্কার প্রস্তাবগুলো তুলে ধরেন সুজন-এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার। এছাড়া ঢাকার বাইরে থেকে নাগরিক সমাজের ২৮ জন প্রতিনিধি সংলাপে অংশগ্রহণ করেন এবং তাঁদের মতামত তুলে ধরেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button