আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগের দাবিসহ ৬ দফা দাবিতে চট্টগ্রামে সমাবেশ; মিছিলে পুলিশের বাঁধা

প্রেস বিজ্ঞপ্তি: ১৩ অক্টোবর ২০২৩ বিকাল ৩:৩০ টায় চট্টগ্রামের লালদীঘির পূর্বপাড়ে জেলা পরিষদ চত্ত্বরে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি সোহেল চাকমার সভাপতিত্বে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার ৬ দফা দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ পরিচালনা করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর সহ-সভাপতি রিপা মজুমদার।

সূচনা বক্তব্যে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন চট্টগ্রাম নগর সভাপতি সাইফুর রূদ্র ফিলিস্তিনের সংগ্রামী জনতার স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে সংহতি জানিয়ে বলেন, দক্ষিন এশিয়া, কাষ্মীর, ফিলিস্তিন, খালিস্তানসহ সারা পৃথিবীর জনগণের সামনে সাম্রাজ্যবাদীরা ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা কায়েম করছে। আওয়ামীলীগ সরকারও বাংলাদেশের সমতলের সকল জনগণের সামনে ফ্যাসিবাদের দেয়াল এবং পার্বত্য অঞ্চলে সেনাশাসনের দেয়াল জনগণের সামনে দাঁড় করিয়েছে। ৭২ এর সংবিধানের মাধ্যমে এই ফ্যাসিবাদী দেয়ালের বীজ বপন হয়েছে। তাই সংবিধানকে উচ্ছেদ করার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের এ দেয়াল সরাতে হবে।

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চবি শাখার সাধারণ সম্পাদক রোনাল চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে সেনাশাসন চলছে। গণতন্ত্র আর সেনাশাসন একসাথে চলতে পারেনা। পাকিস্তান আমলে যেভাবে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ সেনা শাসনের বিরুদ্ধে লড়েছে, আজকে পার্বত্য অঞ্চলসহ বাংলাদেশের জনগনকেও সেভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে।

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা জশদ জাকির বলেন, গণতন্ত্র ধারণাটি শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপার নয় । এই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে এইদেশে বিশ্ববিদ্যালয় গুলো সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ কার্যকর করতে হবে। শিক্ষাঙ্গনসহ সারাদেশে আওয়ামীলীগ যে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন কায়েম করেছে তার বিরুদ্ধে সারাদেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, চট্টগ্রাম নগর সভাপতি দীপা মজুমদার বলেন, কোন দুঃশাসনে দীর্ঘমেয়াদে দেশের জনগণকে দমিয়ে রাখা যায়না। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সূর্যসেন-প্রীতিলতারা রুখে দাঁড়িয়েছে। আজকে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের জনগণ রুখে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের জনগণও এই ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন রুখে দাঁড়াবে।

বিপ্লবী ছাত্র যুবা আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তিতাস চাকমা বলেন, সমতলের ফ্যাসিবাদী শাসন এবং পার্বত্য অঞ্চলের সেনা শাসনকে সমান গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের জনগণকে গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংঘটিত করতে হবে।

গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এ্যানি চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার জন্য আমরা জোটবদ্ধ হয়েছি। শিক্ষার অধিকার রক্ষার জন্য এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সভাপতি মিতু সরকার বলেন,আওয়ামীলীগ আর কোন রাজনৈতিক দল নয়, সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়েছে। আওয়ামীলীগের দলীয় সন্ত্রাসী বাহিনী, আমলা,পুলিশ,বিচারবিভাগের উপর নির্ভর করে এবং নিষ্ক্রিয় মানুষের উপর নির্ভর করে টিকে আছে। ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ ছাত্র-জনতার মনোজগতে রাজনীতির প্রতি ঘৃণা ঢুকিয়ে দিয়েছে। আজকে ছাত্র-তরুণদের রাজনীতি খুঁজে নিতে হবে। রাজনীতি করছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট এবং সোচ্চার জনগণ। এই জনগণকে সমাজের নিষ্ক্রিয় মানুষদেরও সোচ্চার করে তুলতে হবে, গণতান্ত্রিক সংগঠন করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ছাত্র তরুণ জনতাকে জনগণের পক্ষের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারকে পদত্যাগ করাতে হবে, যদি পদত্যাগ না করে এই শাসনকে টেনে হিঁছড়ে নামাতে হবে।

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায় বলেন, বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতার জন্য ব্রিটিশদের তাড়িয়েছে, পাকিস্তানিদের তাড়িয়েছে, কিন্তু জনগণ স্বাধীনতা পায়নি। বাংলাদেশে জনগণ স্বাধীনতার নামে পেয়েছে বাকশাল, তারপর স্বৈরাচার, এরপর ফ্যাসিবাদ। আমরা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট সংখ্যাগরিষ্ঠের গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি। এই লড়াইয়ের মাধ্যমে মেহনতি মানুষের গণতন্ত্র কায়েম করতে হবে, সাংস্কৃতিক অর্থনৈতিক সামাজিক রাজনৈতিক কর্তৃত্ব কায়েম করতে হবে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ বলেন, পুঁজির লুন্ঠন পাহাড় কিংবা সমতলে সমানতালে চলছে। বাংলাদেশের জনগণকে আওয়ামীলীগের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যেমন সংগ্রাম করতে হবে, একইসাথে সামগ্রিক ফ্যাসিবাদ উচ্ছেদের সংগ্রাম আমাদের করতে হবে।

বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় সভাপতি অঙ্কন চাকমা, আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। শুধু তাই নয়, ব্রিটিশরা আমাদের সংগ্রামের কারণে সন্ধি করতে বাধ্য হয়েছিল। একদেশে দুই নীতি চলতে পারেনা, বাংলাদেশে সত্যিকার গণতন্ত্র কায়েম করতে হলে পার্বত্য অঞ্চলের সেনা শাসন উচ্ছেদের জন্যেও এ সংগ্রাম পরিচালিত করতে হবে। পাহাড়ে বসবাসরত জাতিসত্তার জনগণের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, জাতিগত বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। আমাদের ভিটে মাটি কেড়ে নেয়া হচ্ছে, জুম চাষের জমি কেড়ে নেয়া হচ্ছে, ধর্ষণ করা হচ্ছে, গুম-খুন ত আছেই! পার্বত্য অঞ্চলের জনগণকে জীবনের অস্তিত্ব বাঁচাতে লড়াই করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধপূর্ব ৬ দফা যদি ভুল না হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের স্বায়ত্বশাসনের দাবিও ভুল নয়। উগ্র বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, সেনা শাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রনেতা সোহেল চাকমা বলেন, আজকে বাংলাদেশের জনগণ এবং একইসাথে পার্বত্য চট্টগ্রামে জনগণ ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থায় অবরুদ্ধ হয়ে আছে। বাংলাদেশের কোথাও জনগণকে নূন্যতম নিরাপত্তা দিতে এই রাষ্ট্র ব্যর্থ। বরং রাষ্ট্র মাইকেল চাকমাকে গুম, কল্পনা চাকমাকে অপহরণসহ এদশের শত শত জনগণকে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম খুন এর মাধ্যমে জনগণের কন্ঠ রুদ্ধ করা হয়েছে। আওয়ামীলীগ ক্ষমতা টিকাতে গুম খুন হত্যা ছাড়াও ডিজিটাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button