বিএনপির ৬৮ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা নাশকতার মামলা ও গ্রেফতারের ঘটনায় গণসংহতির প্রতিবাদ

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ গত ৩১ অক্টোবর চলমান ফ্যাসিবাদ বিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে শান্তিপূর্ণ ৭২ ঘন্টা অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনে সিদ্ধিরগঞ্জে ভূয়া অগ্নিসংযোগের কথা বলে বিএনপি ৬৮ জন নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা।

দলের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন ও নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস এক যৌথ বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ জানান। উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মহাসমাবেশে প্রশাসন ও আওয়ামীলীগ যৌথভাবে তাণ্ডব চালায়।

তারা হামলা করে নয়াপল্টনে চলা বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড করে দেয় এবং লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীদের উপর গুলি, লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। রাতে অহত অবস্থায় বিএনপির একজন কর্মী মৃত্যুবরণ করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। এর প্রতিবাদে পরেরদিন ২৯ অক্টোবর সারাদেশে শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচি আহ্বান করে বিরোধী দলগুলো। হরতাল কর্মসূচিতেও প্রশাসন গণ গ্রেফতার, হামলা, মামলা, গুলি চালালে ৭২ ঘন্টার অবরোধ কর্মসূচি দেয় দলগুলো। সেই অবরোধ কর্মসূচিতে মানুষ সারা দিলেও প্রশাসন ও সরকার দলীয় গুণ্ডাবাহিনী তাদের অবস্থান থেকে সড়ে দাঁড়ায়নি।

আজ অবরোধের দ্বিতীয় দিনেও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী শান্তি সমাবেশের নামে লাঠিসোঁটা নিয়ে টহল দিয়েছে। জনমনে ভীতির পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এছাড়াও প্রশাসন তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল (৩১ অক্টোবর) মধ্য রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে মামলার প্রধান আসামি করে বিএনপির ৬৮ জন নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে তারা।

এছাড়া মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর, সাধারণ সম্পাদক রাইদ ইশতিয়াক শিকদার, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সভাপতি একে হীরাকে আসামি করা হয়েছে।

গত ২৯ অক্টোবরের হরতালে গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা ও জেএসডি মহানগর কমিটির সভাপতি মোঃ মোতালিবকে মিথ্যা মামলা দিয়ে এখনও বন্দী করে রাখা হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার হাতির পাঁচ পা দেখে ফেলেছে। তারা ধরাকে সরা জ্ঞান করছে। এবার আর কোন রক্ষা নেই। তাদের যে সময় ফুরিয়ে এসেছে তা তাদের কর্মকাণ্ডে বারবার ফুঁটে উঠছে। পুলিশকে সাথে নিয়ে এভাবে বিরোধী দলকে দমন করতে ইতিহাসের কোন স্বৈরশাসকই পারে নাই। বর্তমান সরকারও পারবে না। আমরা সারাদেশে শান্তিপূর্ণ ভাবে কর্মসূচি পালন করছি। দেশের জনগণের আমাদের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন আছে। এই দুই দিনের অবরোধে কোন দুরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। মানুষ তাদের প্রয়োজনে বের হয়েছে। প্রয়োজন শেষ করেই ঘরে ফিরে গেছে। আমরা যেমন কাউকে বাধা দেইনি, জনগণও আমাদের কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা করেছে। কিন্তু সরকার দলীয় গুণ্ডাপাণ্ডাদের ভয়ে অনেকে শঙ্কিত হয়েছে। প্রশাসন সরকারের পেইড ফোর্স হিসেবে কাজ করছে। তারা প্রতিদিন আমাদের শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচিতে হামলা-বাধা দিচ্ছে৷ অবিলম্বে বিএনপি, গণতন্ত্র মঞ্চ সহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিতে হবে।

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা মোঃ মোতালিবকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। বিরোধী দলগুলোর সভা সমাবেশে হামলা-গুলি করা বন্ধ করতে হবে। আমরা প্রশাসনকে বলবো, নিরপেক্ষ অবস্থান নিতে। মানুষের আকাঙ্খা বুঝতে। তারা যদি জনগণের চাহিদার বিপরীত দিকে অবস্থান নেয়, তবে তাদের সাথে আগামীতে বোঝাপড়া হবে। তারা যেভাবে পাখির মতো সারাদেশে মানুষকে গুলি করে হত্যা করছে, এর বিচার হবে। সারাদেশে আন্দোলনের যে ঢেউ উঠেছে, তাতে পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী। আমরা জনগণকে সেই স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শামিল হবার আহ্বান জানাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button