ফ্যাসীবাদী আওয়ামী সরকারের পতনে যুগপৎভাবে আন্দোলনে ৩৯ দলের বৈঠক
৩০ নভেম্বর একতরফা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলসমূহের যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এসময় নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা রাজপথে সক্রিয় বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহ দীর্ঘদিন ধরে দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করে আসছি। এজন্য আমরা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, জাতীয় সংসদের বিলুপ্তি, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ হয়রানিমূলক রাজনৈতিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ও গ্রেফতারকৃত সকল রাজবন্দীদের মুক্তি এবং বিদ্যমান অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সরকার ব্যবস্থা ও সংবিধান সংস্কারের দাবিতে যুগপৎ ধারায় এক আন্দোলনে আছি। এই দাবিগুলো ইতিমধ্যে গণদাবিতে পরিণত হয়েছে।
গণদাবির এই আন্দোলনে আতংকগ্রস্ত হয়ে পরিকল্পিত সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনা ঘটিয়ে সরকার ও সরকারি দল গত ২৮ অক্টোবর ২০২৩ বিএনপিসহ বিরোধী দলসমূহের মহাসমাবেশ পন্ড করে দেয়। বিএনপিসহ বিরোধীদের উপর এই দায় চাপিয়ে গত এক মাস দমন নিপীড়ন ও গ্রেফতারের পথে দেশব্যাপী তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। সরকার ও সরকারি দলের এইসব নৃশংসতায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জন্য আমরা গভীর শোক প্রকাশ করি, নিহত,আহত ও কারাবন্দীদের পরিবারের প্রতি আমরা সমমর্মীতা প্রকাশ করছি।
আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছি সরকারের পদত্যাগের গণদাবিকে উপেক্ষা করে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আরেকটি একতরফা নীলনকশার নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে। সরকারের এই রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে সরকারের সহযোগী হিসেবে নির্বাচন কমিশন আগামী ৭ জানুয়ারি ২০২৪ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। পাতানো এই নির্বাচনের অংশ হিসেবে আজ ৩০ নভেম্বর কথিত নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখও নির্ধারণ করেছে।
জনগণের ভোটের গণতান্ত্রিক অধিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া সমগ্র এই নির্বাচনের তফসিলকে আমরা প্রত্যাখান করছি।
আমরা অনতিবিলম্বে ৭ জানুয়ারি ঘোষিত নির্বাচনী তফসিল বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে আমরা অবাধ, নিরপেক্ষ,অংশগ্রহণ মূলক ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠায় কার্যকরি রাজনৈতিক উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানাই।
আমরা পরিস্কার করে উল্লেখ করতে চাই যে, সরকার যদি জেদ, অহমিকা নিয়ে জবরদস্তি করে নির্বাচনের নামে আরেকটি তামাশা মঞ্চস্থ করতে চায়, তাহলে সরকারের এই অশুভ তৎপরতা প্রতিরোধ করা ছাড়া দেশবাসীর সামনে অন্য কোন পথ থাকবে না।
আমরা সরকার ও সরকারি দলের সকল ধরনের উস্কানি, সহিংসতা ও পরিকল্পিত নাশকতা এড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে চলমান গণ আন্দোলন গণসংগ্রামকে বিজয়ের পথে এগিয়ে নেওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই। এই আন্দোলনে সকল বিরোধী রাজনৈতিক দল,শ্রেণী – পেশা ও সামাজিক সংগঠনকে এগিয়ে আসারও আহবান জানাই।
আজ বিকালে তোপখানা মোড়ে শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।